সমকালীন প্রতিবেদন : ভাদ্রের শেষেই বাতাসে বেজে উঠেছে আশ্বিনের সুর। আর আশ্বিন মানেই বাতাসে শিউলির গন্ধ, একটা পুজো পুজো শারদীয়া বাতাস। এক বছর পরে আবার বাঙালি মেতে উঠতে চলেছে দুর্গাপুজোর আনন্দে।
বিশ্বের আপামর বাঙালি আগামী ২১ থেকে ২৪ অক্টোবর ঢাকের কাঠির ছন্দে উদ্বেলিত হবে। নতুন পোশাক, পুজোপাঠ, অঞ্জলি প্রদান, ভোগ খাওয়া, ঢাকের তালে নাচ আর সারাদিন আড্ডা, ঠাকুর দেখা- দুর্গাপুজোকে ঘিরে এটাই বাঙালির প্রধান কার্যক্রম।
আর এই পুজোর সম্পূর্ণ আবহ তৈরি হয় মহালয়ার দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে 'মহিষাসুরমর্দিনী' শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। আমাদের মনে পুজোর হিল্লোল বাজিয়ে দেয় বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের স্তত্ৰপাঠ। আগামী ১৪ অক্টোবর মহালয়া। ওই দিন থেকে পিতৃপক্ষের শেষ এবং দেবীপক্ষের সূচনা।
পিতৃপক্ষের শেষ দিন নদীর ঘাটে ঘাটে ধর্মপ্রাণ বাঙালী তর্পণ করেন। তাই ওই পিতৃ তর্পণকে খুবই পবিত্র মনে করা হয়। তবে এবছর পিতৃতর্পণে বড়ো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ওই দিন কি সত্যি পিতৃতর্পণ করা যাবে? কারণ ওইদিনই সূর্য গ্রহণ, যা গত ১০০ বছরে হয় নি। সূর্যগ্রহণের দিন কি পিতৃতর্পণ বিধিসম্মত?
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিগত ১০০ বছরের সময়কালে এমনটা হয়নি। মহালয়ার দিন সূর্যগ্রহণ খুব সাধারণ ঘটনা নয়। এই নিয়ে উদ্বেগে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা।
দেবীপক্ষের সূচনায় সূর্যগ্রহণ ঘটলে কোনও অমঙ্গল হবে না তো? প্রতিবারের মতো রীতিনীতি মেনে পিতৃতর্পণ করা যাবে তো? সেদিন ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ গ্রহণ স্পর্শ করবে সূর্যকে। রাত ২টো ২৫ মিনিট পর্যন্ত গ্রহণ থাকবে।
চলতি বছরে ইতিমধ্যেই দুটি গ্রহণ হয়েছে। আগামী ১৪ অক্টোবর বছরের দ্বিতীয় সূর্যগ্রহণও দেখা হবে না ভারতবাসীর। সূর্যগ্রহণের ১৫ দিন পর আবার ২৯ অক্টোবর দ্বিতীয় চন্দ্রগ্রহণ।
বিজ্ঞানীদের মতে, গত ১০০ বছরে মহালয়ায় সূর্যগ্রহণের মতো মহাজাগতিক ঘটনা ঘটেনি। ফলে বিষয়টি নিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষদের উদ্বেগকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে শাস্ত্রজ্ঞদের একাংশের মতে, যেহেতু ভারত থেকে এই গ্রহণের দৃশ্যমানতা নেই, তাই তর্পণে কোনও বাধা নেই। নেই কোনও অমঙ্গলের ভয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন