সমকালীন প্রতিবেদন : ক্যানসার যেমন একটি মারণ রোগ, তেমনই এই চিকিৎসাও হয় দুর্বিষহ। এই রোগ সারাতে হলে কেমোথেরাপি নিতে হয়, যার প্রভাব পড়ে মানুষের সৌন্দর্যের উপর। বিশেষ করে কেমোথেরাপি নিলে মাথার চুল উঠে যায়।
আগেও ক্যানসার আক্রান্তদের সাহায্য করার জন্য চুল দান করেছে স্কুলের ছাত্রী থেকে শুরু করে গৃহবধূরা। কিন্তু এবার চুল দান করে সবার মন জয় করে নিল বছর পাঁচেকের ছোট্ট কন্যা অনসূয়া ঘোষ। ত্রিপুরার আগরতলার এই শিশুকন্যা বিহার স্কুলে কেজি-২ এর ছাত্রী।
ছোট থেকেই তার চুলের বহর ছিল ভালো। তাই এই বয়সেই বেশ লম্বা চুল করেছিল ত্রিপুরার এই কন্যা। কিন্তু এক ক্যানসার আক্রান্তকে সাহায্য করার জন্য ওই চুল কেটে ফেলল সে। নিজের লম্বা কেশ রাশি কেটে স্বেচ্ছায় সে তা দান করল ক্যানসার আক্রান্ত এক মহিলাকে।
জানা গেছে, ক্যানসারে আক্রান্ত সংঘমিত্রা শালিগ্রাম এখন নাগপুর ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। ৫০ বছর বয়সী মহিলাকে কেমোথেরাপি দেওয়ার কারণে তাঁর মাথার চুল ঝড়ে গিয়েছে। তাই তাঁর মাথার চুল আবার প্রতিস্থাপন করার জন্য আহ্বান রাখেন তিনি।
এই বিষয়টি নজরে আসে ব্যাঙ্গালোরের এক সামাজিক সংস্থার। এই বিষয়টি জানতে পারেন অনুসূয়ার বাবা অনিমেষ ঘোষ। তিনি জানান যে ওই মহিলাকে চুল দিতে আগ্রহী তাঁরাও। তখন ওই সংস্থা যোগাযোগ করে আগরতলার বড়দোয়ালীর বাসিন্দা অনিমেষ ঘোষের সঙ্গে।
তাঁর পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে অনসূয়া ঘোষের মাথার চুল বয়সের তুলনায় অনেক বড়। তাই অনসূয়ার পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় যে, মেয়ের মাথার এই চুল স্বেচ্ছায় দান করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত থেকেই শিশু বিহার স্কুলে কেজি ২ এ পাঠরত ছাত্রী অনসূয়া ঘোষের বাবা ক্যানসার আক্রান্ত মহারাষ্ট্রের সংঘমিত্রা শালিগ্রাম মানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য মেয়ের চুল পাঠিয়েছেন।
অনসূয়া ঘোষের মা সীমা চাকমা একজন স্কুল শিক্ষিকা। তিনি জানিয়েছেন, তারা এই কাজটি করতে পেরে খুবই আনন্দিত। ছোট্ট বয়সেই সমাজের জন্য যে কাজটি করেছে তাঁদের মেয়ে অনসূয়া, তাতে খুব খুশি এবং গর্বিত তিনি। হয়তো এই অনুসূয়ারা ভবিষ্যতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিজের সুখ বা সৌন্দর্যের কথা ভাবেন না। মুখের হাসির থেকে বড় আর কিই বা হতে পারে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন