সমকালীন প্রতিবেদন : আন্ত:রাজ্য প্রতারণা চক্রের এক পান্ডাকে গ্রেপ্তার করল সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ফোন করে ব্যাঙ্কের কার্ড ব্লক হয়ে গেছে এবং সেটি ঠিক করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওটিপি জেনে নিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল অভিযুক্ত যুবক।
প্রতারণার নানা কৌশল বাজারে প্রচলিত রয়েছে। তারমধ্যে সবথেকে বেশি প্রচলিত ব্যাঙ্কের নাম করে প্রতারণা। সেক্ষেত্রে অচেনা নম্বর থেকে ব্যাঙ্কের গ্রাহকের কাছে ফোন করে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বলা হয়, আপনি যদি আপনার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডটি সচল রাখতে চান, তাহলে আপনার কার্ডের নম্বরটি জানান।
প্রথম ধাপে আপনি যদি সেই নম্বর জানিয়ে দেন, তাহলে দ্বিতীয় ধাপে আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি ঢুকবে। আর সেটিও যদি আপনি ফোনের অপর প্রান্তের অচেনা ব্যক্তিকে জানিয়ে দেন, তাহলে আর রক্ষা নেই। নিমেষের মধ্যে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করে নেবে ফোনের অপর প্রান্তে থাকা প্রতারকেরা।
ঠিক এভাবেই প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন বনগাঁর বল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা মিলি মন্ডল। ১ জুন তিনি বনগাঁর সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, তার স্বামী বিধান মন্ডলের কাছে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে।
তাঁকে বলা হয় যে, তাঁর ক্রেডিট কার্ডটি ব্লক হয়ে গেছে। সেটি ঠিক করার জন্য তাঁর যে ডেবিট কার্ড আছে, তার নম্বর চাওয়া হয়। সরল বিশ্বাসে তিনি সেটি বলে দেন। এরপর তাঁর মোবাইলে একটি ওটিপি আসে। সেটিও ফোনের অপরপ্রান্তের অচেনা ব্যক্তিকে জানিয়ে দেন বিধান মণ্ডল।
আর তাতেই হাতে চাঁদ পেয়ে যায় প্রতারকেরা। তখনও পর্যন্ত বিধান মণ্ডল এবং তাঁর স্ত্রী বুঝতেই পারেন নি যে, নিজেরাই নিজেদের কতটা ক্ষতি করলেন। প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে গেছেন তা। এরপরই বিধান মণ্ডলের অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়।
এই ঘটনার পর বিধান মন্ডলের স্ত্রী মিলি মন্ডল বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ বুধবার দুপুরে পুরুলিয়া থেকে বছর ২২ বয়সের উজ্জ্বল সিং নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে।
ধৃতকে বৃহস্পতিবার বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ধৃতকে আরও জেরা করে এই প্রতারণা চক্রের বাকিদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, এটি আন্ত:রাজ্য প্রতারণা চক্রের একটি দল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন