সম্পদ দে : এ শতাব্দি যেন ভারতেরই। একের পর এক কৃতিত্ব অর্জন করেই চলেছে ভারত। আর তার মধ্যেই গত ২৩ আগস্ট চাঁদকেও হাতের মুঠোয় নিয়ে নিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো।
চাঁদে সফল অবতরণের পর ইসরোর পরের মিশন ছিল আদিত্য এল ১, যা সফলভাবে যাত্রা করেছে সূর্যের দিকে। আর তারপর একের পর এক মহাকাশযাত্রায় লেগে থাকবে ইসরোর, যেখানে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই ইসরো মহাকাশে মানুষ পাঠাতে চলেছে।
তবে কথা হচ্ছিল চন্দ্রযান-৩ কে নিয়ে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণের পরে কি তাহলে চাঁদকে নিয়ে গবেষণা শেষ ইসরোর? নাকি এখনো আরো কাজ বাকি চন্দ্রযান নিয়ে? আসলে এটাই চন্দ্রযানের শেষ অভিযান নয়।
আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই উৎক্ষেপণ হতে চলেছে চন্দ্রযান-৪। ভারতের এই মিশনে জাপানের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র জাপান এরোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি বা জাক্সা সাথ দেবে ইসরোর।
জাপান ও ভারতের এই চন্দ্রযান মিশনের নাম হবে লুনার পোলার এক্সপ্লোরেশন মিশন। সংক্ষেপে একে ডাকা হবে লুপেক্স নামে। তবে চন্দ্রযান-৩ এর মতো এই অভিযানে কেবলমাত্র চাঁদের দক্ষিণ মেরু অনুসন্ধান করা হবে না, বরং চাঁদের দুই মেরুতেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে।
খোঁজ করা হবে চাঁদে উপস্থিত জলের। তবে কেন চাঁদের পৃষ্ঠে জলের খোঁজ করার জন্য এত উৎসাহী বিজ্ঞানীরা? আসলে ভবিষ্যতে চাঁদে মানুষের বসবাসের জন্য কলোনি তৈরি করতে গেলে সব থেকে বেশি যেটা প্রয়োজন পড়বে, তা হলো জল। পৃথিবী থেকে ঘন ঘন চাঁদে জল পাঠানো তো সম্ভব নয়, সেই জন্য জলের খোঁজ করতে হবে চাঁদেই।
চন্দ্রযান-৪ চাঁদের পৃষ্ঠে জলের খোঁজ করবে বিভিন্নভাবে। বিজ্ঞানীদের মতে, জল চাঁদের পৃষ্ঠে তরল অথবা বরফ দুটো আকারেই থাকতে পারে, তবে বরফ আকারে থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
একবার জলের সন্ধান পেয়ে গেলে, তারপরে খোঁজ করা হবে, সেই জল আদপেও পান করার বা ব্যবহার করার যোগ্য কিনা। এই অভিযান একবার সফল হলে বিজ্ঞানীদের কাছে অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, চাঁদে মানুষের কলোনি তৈরি করা বাস্তবে সম্ভব কিনা। আর সম্ভব হলেও তা ঠিক কতটা সহজ বা কঠিন।
ভবিষ্যতের এই অভিযানের জন্য এখনও প্রায় তিন বছর বাকি থাকলেও তা দেখতে না দেখতেই কেটে যাবে। আর তারপর ইসরোর এই মহিমা আরো বেশি করে ছড়িয়ে পড়বে বিশ্ববাসীর মুখে মুখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন