সম্পদ দে : কোভিড-১৯ এবং তার ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন এর আঘাতের পরে এবার আবির্ভূত হয়েছে একটি নতুন উপ-প্রজাতি, 'এরিস', যা ইজি 5.1 নামেও পরিচিত। এর বৈশিষ্ট্যগুলি অত্যন্ত সংক্রামক হয়ে ওঠার কারণে বিশ্ব আবারও এক ভয়ঙ্কর হুমকির সম্মুখীন।
'দ্য ওয়াল ব্যুরো'– তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে যে, ব্রিটেনে প্রথম শনাক্ত হওয়া কোভিডের এই অভিনব রূপটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং ইতিমধ্যে প্রতি সাত জন কোভিড-১৯ এর রোগীর ক্ষেত্রে একজনের শরীরে সনাক্ত করা হচ্ছে।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির খবর অনুসারে, এক সপ্তাহের মধ্যে এরিসের সংক্রমণের হার ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে গুরুতর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ভাইরোলজিস্টরা সতর্ক করেছেন যে, ভাইরাসটি একাধিক মিউটেশনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে এর মধ্যে একাধিক বদল এবং দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
যদিও এরিসের সঠিক প্রাণঘাতী ক্ষমতার দিকটি অজানা রয়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, এটির মানবদেহে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতার কারণে জটিল রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে। উচ্চ সংক্রামকতার ফলে এর ক্ষমতা এবং গুণ দুটোই দিন দিন বাড়ছে।
পূর্ববর্তী রূপগুলি থেকে এরিসকে যা আলাদা করে তা হল, অ্যান্টিবডিগুলির শক্তি হ্রাস করার ক্ষমতা। অ্যান্টিবডি, ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে এর ক্ষমতাকে কমিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এরিসের বিরুদ্ধে শরীরে থাকা অ্যান্টিবডি অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। কারণ, ভাইরাস শরীরের মধ্যে এই সুরক্ষামূলক উপাদানগুলিকে নষ্ট করার প্রক্রিয়া তৈরি করছে।
বৈজ্ঞানিক মহল পরিস্থিতিটি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সদ্য কোভিড-১৯ এর প্রতিঘাত থেকে বেরিয়েই এরিস একটি নতুন মহামারীর দিকে নিয়ে যাবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। যেহেতু নতুন ভাইরাসটি মানব শরীরের মাধ্যমে আগের ভেরিয়েন্টগুলি থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, তারজন্য একে নিয়ে উদ্বেগের একটি বৈধ কারণও রয়েছে।
এই নতুন হুমকি মোকাবেলা করতে এবং বিশ্বব্যাপী সরকার এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে এরিস এর বিস্তার রোধ করতে এবং দুর্বল জনসংখ্যাকে রক্ষা করার জন্য নজরদারি, পরীক্ষা এবং টিকা দেওয়ার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
যেহেতু বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা এরিসের আচরণ এবং বৈশিষ্ট্যগুলি বোঝার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, তাই ভাইরাসের বিস্তার রোধে সুরক্ষা নির্দেশিকা এবং টিকা প্রচারে জনসাধারণের সহযোগিতা সর্বোপরি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রায় দু বছরের একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পেরিয়ে আসার পরে গোটা পৃথিবীর উপর আবারও মহামারী এবং লকডাউনের মতো কোনো বিপদ ঘনিয়ে আসছে কিনা, তা এখন কেবলমাত্র সময়ই জানাতে পারবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন