সম্পদ দে : আকাশ গবেষণায় ইসরো ব্যাপক সাফল্যের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। প্রশ্ন থেকে যায়, চাঁদের কোন অজানা রহস্যের সন্ধানে চন্দ্রযান-৩ এর অভিযান ? আগামী ২৩ তারিখ চন্দ্রযান-৩ যখন চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে, তখন ভারতের মাথায় পরবে একাধিক শিরোপা।
তবে ইসরোর এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো -
* চাঁদের সৃষ্টি রহস্যের সন্ধান করা :
এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা, কয়েক কোটি বছর আগে মঙ্গলের আকারের কোনো গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর সংঘাতের ফলেই চাঁদের সৃষ্টি। এই তত্ত্বের সত্যতা খুঁজবে চন্দ্রযান-৩। এছাড়াও চাঁদের সৃষ্টির পিছনে আর কোনও রহস্য আছে কিনা, তার খোঁজও করবে চন্দ্রযান।
* চাঁদে জলের কি কোনও অস্তিত্ব আছে ?
এখনও পর্যন্ত যা জানা যায় যে, কোনও এক সময় চাঁদে হয়তো জল ছিল। কিন্তু এখন নেই। তবে এই মিশনের একটা প্রধান উদ্দেশ্য হলো, চাঁদে জলের অস্তিত্বের সন্ধান করা। সেই কারণেই এই অভিযান হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে- যা এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ করে নি। ইসরোর বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, দক্ষিণ মেরুতে জলের অস্তিত্ব থাকলেও থাকতে পারে।
* চাঁদের প্রকৃত আকৃতি কেমন ?
সাধারণভাবে চাঁদের আকৃতি সম্পর্কে আমাদের একটি ধারণা থাকলেও সেই ধারণার সত্যতা যাচাই করবে চন্দ্রযান-৩।
* ক্ষণস্থায়ী চাঁদের আলোর পর্যালোচনা :
টি.এল.পি বা ক্ষণস্থায়ী চাঁদের আলো নিয়ে পর্যালোচনা করা এই মিশনের একটি প্রধান লক্ষ্য। দেখা গেছে, মাঝে মাঝে খুব অল্প সময়ের জন্য চাঁদে আলোর ঝলকানি দেখা যায়। এর কারণ কি উল্কাপাত, নাকি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা ঘুরে বেড়াচ্ছে চাঁদের বহির্দেশে? এই রহস্যের সন্ধান করাও চন্দ্রযান-৩ এর একটি উদ্দেশ্য।
* চৌম্বকীয় অসঙ্গতির কারণ কি ?
এটা প্রমাণিত যে চাঁদের চৌম্বকীয় বল এক সময় পৃথিবী থেকে বেশি ছিল। কিন্তু এখন অনেক কম। কেন? সেই দিকটিও দেখবে এই মিশন।
* চাঁদের কম্পন :
আমেরিকার গবেষকেরা প্রথম প্রমান করেন যে, চাঁদে নিয়মিত কম্পন অর্থাৎ ভূমিকম্প হয়। কিন্তু কেন ? এর পিছনে কি আছে টেকটোনিক কোনও কাজ ?
: ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :
* চাঁদের অগ্নুৎপাত :
চাঁদে এক সময় প্রচুর অগ্নুৎপাতের ফলে অনেক লাভা স্রোত তৈরি হয়েছে। সেই লাভার মাটি নিয়ে গবেষণা করে চাঁদের অভ্যন্তরিন উপাদানের সন্ধান করাও একটি উদ্দেশ্য চন্দ্রযান-৩ এর।
* চাঁদের গহ্বর ও ধূলিকণা :
চাঁদে আছে অজস্র ছোট-বড়ো গর্ত এবং প্রচুর ধূলিকণা। কিন্তু কিভাবে তা তৈরি হলো? চন্দ্রযান-৩ এর একটি অন্যতম গবেষণার বিষয় এটিও। এই বিস্তৃত ধূলিকনার মধ্যে আছে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতব পদার্থ। এদের পারস্পরিক সংঘাতের ফলে কোন শক্তির সৃষ্টি হয়, তা খুঁজে দেখবে চন্দ্রযান-৩।
চন্দ্রযান-৩ এর সফট ল্যান্ডিংয়ের প্রধান অন্তরায় এই ধূলিকণা। এই ধূলিকনার সঙ্গে মোকাবিলা করেই চাঁদে নামবে চন্দ্রযান- ৩। আর এরপর শুরু হবে নানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজা। শেষ পর্যন্ত এই অভিযানে সে কতটা সফল হয়, এখন তারই অপেক্ষা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন