সমকালীন প্রতিবেদন : 'মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য'– ভূপেন হাজারিকার গানটি সত্যি আবারও স্মরণে এলো। যখন একাধিক মানুষ পরস্পরের প্রতি সহমর্মী হয়ে ওঠেন, তখনই তিনি যথার্থ মানুষ। তেমনই এক নিদর্শন পাওয়া গেলো এক পরীক্ষাকেন্দ্রে। এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না।
পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। তাঁর কোলে এক শিশু। হাসছে-খেলছে, কখনও গলা জড়িয়ে ধরছে ওই পুলিশকর্মীর। শিশুকে কোলে নিয়ে খেলছেন তিনিও। এ যেন মা আর সন্তানের খুনসুটি চলছে। এমনি একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে।
এটি গুজরাতের একটি ঘটনা। রবিবার সেখানকার একটি শহরের পরীক্ষাকেন্দ্রে গুজরাত হাইকোর্টের পিওন পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া ছিল। সরকারি পদের জন্য পরীক্ষা মানেই প্রচুর প্রতিযোগী, বিস্তর প্রতিযোগিতা। সেই পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন ওই ছয় মাসের শিশুর মা।
সেই মুহূর্তে বাড়িতে শিশুটিকে রাখার কোনও লোক ছিল না। ফলে বাধ্য হয়েই নিজের শিশুসন্তানকে কোলে নিয়েই পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে আসেন পরীক্ষার্থী মা। তারপর যা ঘটলো, তা অনন্য মানবতার নিদর্শন।
শিশু কোলে পরীক্ষা দেওয়া কঠিন, তাই পরীক্ষার সময়টা সেই শিশুকে সামলালেন পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক মহিলা পুলিশকর্মী। সেই পুলিশ কর্মীও একজন 'মা'। মাতৃত্ববোধে পূর্ণ তাঁর হৃদয়। ভাইরাল ভিডিও দেখে খুব খুশি সকলেই, খুশি নাগরিক মহল।
ওই ভিডিওটি ট্যুইটারে শেয়ার করা হয়েছে আহমেদাবাদ পুলিশের অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে। মুহূর্তে তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকেই জানা যাচ্ছে, ওই মহিলা কনস্টেবলের নাম দয়া বেন। এই ভিডিওতে দয়া বেন যথার্থ মাতৃত্বের প্রতীক।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ওই ৬ মাসের শিশুকে কোলে নিয়ে খেলায় ভুলিয়ে রাখছেন তিনি। কখনও কোলে নিয়ে নাচাচ্ছেন, কখনও কথা বলছেন। উত্তর দিচ্ছে শিশুও।
কখনও সে গলা জড়িয়ে ধরছে ওই পুলিশ কর্মীর, কখনও মাথা রাখছে তাঁর কাঁধে। এভাবেই পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে শেষ হলো মায়ের পরীক্ষা দেওয়া। এ যেন চিরন্তন সন্তান এবং মাতৃত্বের মধ্যকার নিবিড় সম্পর্ক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন