সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের জল-স্থল-অন্তরীক্ষের যুদ্ধযান এখন বিশ্বের যেকোনও দেশকেই চ্যালেঞ্জ করতে পারে। এবার ভারতের যুদ্ধযানে নতুন সংযোজন নীরাক্ষি। দেখতে অবিকল সাবমেরিন। কাজেও তাই। শুধু চেহারা ছোট। তার ভিতর কোনও মানুষের পক্ষে থাকাও সম্ভব নয়।
জলে ডুবে শত্রুপক্ষের উপর নজরদারিই তার আসল লক্ষ্য। জলের গভীরে সে তুলতে পারে স্পষ্ট ছবি। অতি সহজেই সে শনাক্ত করতে পারে মাইনের মতো মারাত্মক বিস্ফোরক। শুক্রবার কলকাতার জলে ভাসল দেশের প্রথম ‘সাবমেরিন ড্রোন’।
কলকাতার যুদ্ধজাহাজ কারখানা গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স এবং ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের যৌথ উদ্যোগে এই শহরে তৈরি হল এই মিনি সাবমেরিন। সাত ফুটেরও কম এই ‘সাবমেরিন ড্রোন’টি বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্যে পরিচালিত হয়।
৪৫ কিলো ওজনের এই মিনি ডুবোজাহাজ অতি সহজেই যে কোনও জাহাজে বহন করা যাবে। এক বা দু’জন বহন করে সেটি জলে ভাসাতে পারেন। দূর থেকে করা যেতে পারে নিয়ন্ত্রণ। নদী, সমুদ্র, লেকের জলের তিনশো মিটার নিচে বিচরণ করতে পারে টানা চার ঘণ্টা ধরে।
গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স এর চেয়্যারম্যান এবং এমডি পি আর হরি জানান, এই ডুবো-ড্রোনটি জলের নিচে ঘুরে নজরদারি এবং তথ্য সংগ্রহ করে পাঠাতে সক্ষম। মানুষচালিত বড় সাবমেরিন যে জায়গায় বিচরণ করতে পারে না, নীরাক্ষি তা পারবে।
এই ডুবো-ড্রোন দূর থেকে শত্রুপক্ষের কোনও জাহাজ বা সাবমেরিন নজরে আসলে সেই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে পাঠানো হবে নিয়ন্ত্রকদের কাছে। ফলে গভীর সমুদ্র বা উপকূল, এমনকী নদীতেও নজরদারির জন্য নৌসেনা অথবা উপকূলরক্ষী বাহিনী সহজেই এই জলযান ব্যবহার করতে পারে।
নীরাক্ষির বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে জলের নিচে কোথাও অথবা জাহাজ বা সাবমেরিনে বসিয়ে দেওয়া শত্রুপক্ষের মাইন শনাক্ত করার। বড় লেকে নজরদারির জন্য সেনাবাহিনীও এই ডুবো-ড্রোন ব্যবহার করতে পারে।
আগামী এক বছরের মধ্যেই মাইন শনাক্ত করার পর তা নষ্টও করার ক্ষমতা রাখবে। প্রয়োজনে জলের নিচে দিয়ে কোনও বিশেষ বস্তু বহন করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে সে।
এই আবিষ্কারকে বৈজ্ঞানিকরা ঐতিহাসিক আবিষ্কার বলেছেন। এমনিতেই চিন এবং পাকিস্থান মাঝেমাঝেই ভারতের ঘাড়ে যুদ্ধের নিঃশ্বাস ফেলে। তাই এই জলযান একটা নতুন অধ্যায় তৈরি করলো বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন