সমকালীন প্রতিবেদন : রেল যাত্রীদের জর্জরিত হতে হয় এমন একাধিক অপরাধমূলক কার্যকলাপ মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করলো রেল। এরমধ্যে অন্যতম বিষয় ছিল, ট্রেনের ভেতরে রেলযাত্রীদের উপর বৃহন্নলাদের অত্যাচার। এব্যাপারে রেল সুরক্ষা বাহিনী, জেনারেল রেলওয়ে পুলিশ, বন বিভাগ এবং আবগারি দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের একত্রিত করে অপরাধমূলক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় বসল রেল কর্তৃপক্ষ।
বেশ কিছুদিন ধরে রেলওয়ে বিভাগ নারী পাচার, অবৈধ কাঠের ব্যবসা এবং গাঁজা, ব্রাউন সুগারের মতো অবৈধ পদার্থের চোরাচালান সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ওপর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ অতীতেও এই অপরাধগুলিকে মোকাবেলা করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তবে তখনও প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে ঘৃণ্য কার্যকলাপগুলি অব্যাহত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে, এই অপরাধমূলক উদ্যোগগুলিকে মোকাবেলা করার বিষয়ে আলোচনার মধ্যেই ট্রেন ভ্রমণের সময় তথাকথিত বৃহন্নলাদের দ্বারা যাত্রীদের উপর যে যন্ত্রণা তৈরি করা হয়ে থাকে, তা মোকাবেলার দিকে একটি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চুরি, অর্থ সাহায্যের নামে জুলুমবাজি এবং হয়রানির মতো প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি যাত্রীদের এবং তাঁদের পরিবারের উপর দুর্দশার সৃষ্টি করার মতো অভিযোগও আছে।
এই ধরনেরই দুর্দশার শিকার এক যাত্রীর দুর্ভোগ ক্যাপচার করে একটি ভাইরাল ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরে তা রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আর এর পরেই আলিপুরদুয়ার রেলওয়ে বিভাগ ট্রেনে বৃহন্নলাদের ভিক্ষা করা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
যে বা যারাই এই অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে আইনি পরিণতির মুখোমুখিও হতে হবে। সম্প্রতি ডিআরএম অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল সম্মিলিতভাবে সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে একটি ব্যাপক কৌশল প্রণয়ন করা।
সেই বৈঠকে জংশন রেল ডিভিশনের সহকারী নিরাপত্তা কমিশনার ডি কে চৌধুরী, আলিপুরদুয়ারের আবগারি দপ্তরের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অমিতা লেপচা, জলদাপাড়া বন বিভাগের রেঞ্জার প্রসেনজিৎ পাল, শিলিগুড়ির ডেপুটি এসআরপি তপন ভট্টাচার্য এবং অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
রেলওয়ে বিভাগের এই সক্রিয় উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রেল যাত্রীরা। আলিপুরদুয়ার শহরের একজন বাসিন্দা বলেছেন, 'এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। আমরা এই ভিক্ষুকদের দ্বারা সৃষ্ট অস্বস্তির সমাধানের জন্য দীর্ঘকাল ধরে আকাঙ্ক্ষিত ছিলাম।'
একটু দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াই এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এই সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রেল বিভাগের সকলের জন্য আরও নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক ভ্রমণ অভিজ্ঞতার দিকে নেওয়া এই পদক্ষেপ সকলের কাছেই প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে। রেলের অন্যান্য ডিভিশনের ক্ষেত্রেও এই ধরণের কড়া পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন রেলযাত্রীরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন