সমকালীন প্রতিবেদন : অবশেষে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হলো। বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করলেন নবনিযুক্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। আগামী ৮ জুলাই, শনিবার এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ থেকেই রাজ্যে নির্বাচনবিধি লাগু হয়ে গেল।
এবারও রাজ্যে একদফাতেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। তবে রাজ্য পুলিশ না কি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এদিন জানান। দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজ্যের বাকি ২২টি জেলায় হবে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল, শুক্রবার থেকে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমার কাজ শুরু হবে। মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ১৫ জুন। ২০ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। ১১ জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের গণনা হবে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ৩ টে পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। গতবারের মতো এবারেও অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে কি না, তা এখনও সিদ্ধান্ত হয় নি।
রাজ্যে ৩৩১৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৫৯৪ টি। মোট পঞ্চায়েত আসন ৬৩ হাজার ২৮৩ টি। একই দিনে এই ৬৩ হাজার ২৮৩ টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে। তবে বর্ষায় ভোট হওয়ায় গ্রামে ভোট দিতে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
উল্লেখ্য, পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাগামছাড়া হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। তা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে একদফাতেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। আগামীকাল নোটিফিকেশন জারি হবে। সিভিক ভলান্টিয়ারেরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে বিরোধীদের দাবি মতো নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে কিনা, সে বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে রাজ্যের নয়া নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, 'রাজ্য পুলিশের উপরই আস্থা রাখা উচিত। বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এদিকে, বিরোধী দলগুলির সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করে আচমকা ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা করার সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, 'মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য যে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। তাই এর বিরুদ্ধে আগামীকাল আদালতের দারস্থ হচ্ছি আমরা।'
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানান, 'পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা আমরা জানতাম। কিন্তু বিরোধীরা যাতে সেভাবে প্রস্তুতি না নিতে পারে, তারজন্য আচমকা ভোটের দিন ঘোষণা করা হল। ভোটের নামে এর আগের রাজ্যে প্রহসন হয়েছে, এবারেও তাই হবে।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন