Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩

মাহেশ সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা‌

Bathing journey-of-Jagannathdev

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌আজ শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। আগামী ২০ জুন রথযাত্রা উৎসব। রীতি অনুযায়ী রথযাত্রার আগে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা উৎসব হয় অনুষ্ঠিত হয়। সেই উপলক্ষ্যে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে স্নানযাত্রা উৎসবে মেতে উঠলেন ভক্তপ্রাণ মানুষেরা। 

বাংলার ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রার অন্যতম মাহেশের রথযাত্রা। রবিবার একটু বেলায় হয়ে গেল মাহেশের রথের ঐতিহ্যবাহী স্নানযাত্রা। ২৮ ঘড়া গঙ্গাজল আর দেড় মন দুধে স্নান করলেন জগন্নাথদেব। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন হয় চন্দন উৎসব। চন্দন উৎসবের ৪২ দিনের মাথায় আসে স্নানযাত্রা। 

মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের সামনে স্নানপিঁড়ির মাঠে ধূমধাম করে হয় স্নানযাত্রা উৎসব। বহু ভক্তের সমাগম হয়। রবিবার সকালে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার বিগ্রহ জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনে বের করা হয়। পুজোপাঠের পর স্নানপিঁড়ির মঞ্চে হয় স্নানযাত্রা। ভক্তদের সমাগম চোখে পড়ার মতো।

দুধ এবং গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয় জগন্নাথদেব, বলরাম এবং সুভদ্রাকে। স্নানের পর জগন্নাথের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। এই সময়ে শুয়ে পড়বেন জগতের নাথ। এই সময়ে হয় তাঁর অঙ্গরাগ। ভেষজ রঙ দিয়ে জগন্নাথদেবকে রাঙানো হয়। গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ থাকে। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর ছাড়লে হয় নবযৌবন উৎসব। 

পরদিন রথে চেপে মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। প্রতি বছর জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা উপলক্ষে এখানে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। ৬২৭ বছর ধরে চলমান ইতিহাসের সাক্ষী এই মাহেশের রথযাত্রা। 

মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের এক সেবাইত বলেন, পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী গণপতি ভট্ট ছিলেন গণেশের উপাসক। তিনি পুরী নীলাচলে গণপতি দর্শনের উদ্দশ্যে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে গণেশকে দেখতে না পেয়ে মনোদুঃখে ফেরার পথ ধরেন। 

সেই সময়ে জগন্নাথ ব্রাহ্মণবেশে তাঁর সামনে আসেন। তাঁকে বলেন স্নানবেদীতে যেতে। সেখানে পৌঁছেই অবাক গণপতি ভট্ট। সেখানে জগন্নাথকে গজবেশে দেখতে পান গণপতি। স্নানযাত্রার দিন তাই জগন্নাথদেব গজবেশই ধারণ করেন। মাহেশের রথযাত্রার উল্লেখ আছে একাধিক গ্রন্থে। বঙ্কিমচন্দ্রের 'রাধারানী' উপন্যাসে এই যাত্রার কথা উল্লেখ আছে।

মাহেশে এ বছরই প্রথম স্নান মঞ্চে নিয়ে আসার আগে প্রভুর গজবেশ ধারণ করানো হয়। উৎকল মতে স্নানযাত্রায় গজবেশ ধারণ করানো একটি প্রাচীন রীতি, যদিও মাহেশে এই গজবেশ এবার প্রথম। স্নানযাত্রা উপলক্ষে মাহেশে এদিন ছিল সাজো সাজো রব। সাত সকালেই স্নানযাত্রা প্রত্যক্ষ করার জন্য প্রচুর মানুষের ভিড় জমে ছিল স্নানপিঁড়ির মাঠে। জোরদার করা হয়েছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 

নদীয়ার ইসকন মায়াপুরের রাজাপুর জগন্নাথদেবের মন্দিরে স্নানযাত্রা পালিত হল। জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে বহুভক্ত, সাধারণ মানুষ এই স্নানযাত্রা উপলক্ষে হাজির হয়েছিলেন। সকাল থেকেই বিভিন্ন পূজার্চনার মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে দুদিন ব্যাপী জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন