Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

কেন্দ্রের কাছে আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল রাজ্য নির্বাচন কমিশন

 ‌

Another-800-companies-are-central-forces

সমকালীন প্রতিবেদন : গতকালই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২০১৩ সালের থেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করতে হবে। সেই নির্দেশের ২৪ ঘন্টা কাটার আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রিকুইজিশন পাঠালো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। 

রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কড়া মনোভাব দেখায় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষন যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন আদালতের রায়কে উপেক্ষা করছে। তাই এবার প্রচন্ড ক্ষুব্ধ উচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের  নির্দেশকে বহাল রাখায় একপ্রকার ধাক্কা খায় রাজ্য। 

সেই ধাক্কা খেয়েও রাজ্য নির্বাচন কমিশন কৌশল করে মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করানোর চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছিল। যদিও হাইকোর্টে সেই কৌশল খাটল না। ফলে শুনানিতে বিচারপতি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, 'কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া হয়নি। কমিশন সক্রিয় নয়, তাই কোর্টের নির্দেশ মানতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না।' 

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ বিচারপতি মন্তব্য করেন, 'কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করতে সবরকম পদক্ষেপ করছে কমিশন। ২০১৩-য় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য এই কমিশন সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছি না সেই কমিশনের স্বতন্ত্রতার কী হল?' কোর্টের নির্দেশ ছিল গোটা নির্বাচন পর্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বিচারপতি আরও বলেন, 'আমরা কমিশনের উপরেই মূল্যায়নের ভার ছেড়েছিলাম। ১৭০০ না ৮ লক্ষ বাহিনী-সেটা ঠিক করা কী আদালতের কাজ? প্রাথমিকভাবে এই কেন্দ্রীয় বাহিনী অপর্যাপ্ত বলে মনে হচ্ছে। মানুষ প্রশাসনের উপর আস্থা হারালে ভোট করে লাভ কী? আমাদের কি কমিশনের নিরপেক্ষতায় সন্দেহ করা উচিত?' 

ভোটের আগেই একের পর এক প্রাণহানি, বেলাগাম হিংসা। কোর্টের নির্দেশের পরেও পঞ্চায়েত ভোটে জেলাপ্রতি মাত্র ১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় কমিশন। রাজ্যের ৬১ হাজারেরও বেশি বুথে ৫ কোটি ৬৭ লক্ষ ভোটারের নিরাপত্তায় মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় কমিশন। 

বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে থাকবে রাজ্যের স্পেশালাইজড ফোর্স। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে থাকবে রাজ্যের স্পেশালাইজড ফোর্স, সিদ্ধান্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে সমন্বয়ের দায়িত্বে বিএসএফের আই জি (কলকাতা) এস সি বুডাকোটি। 

২০১৩-র  পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তায় ছিল ৮২‌০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ২০২৩-এ লাগাতার অশান্তির পরেও মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আদালতের নির্দেশের পরেও কেন এত কম সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। 

এই পরিস্থিতিতে অবশেষে বৃহস্পতিবার নতুন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আরও ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রিকুইজিশন পাঠালো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এর ফলে রাজ্যের আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে। এরপরেও কি রাজ্যে সুষ্ঠু, অবাধ, রক্তপাতহীন, মৃত্যুহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ?‌ প্রশ্ন সেখানেই।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন