সমকালীন প্রতিবেদন : রাজ্য ছাড়িয়ে ভিন রাজ্য থেকে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন কলকাতা হয়ে বিশেষ চক্রের মাধ্যমে একত্রিত হতো সীমান্ত শহর বনগাঁয়। আর সেখান থেকে চোরা পথে তা বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেত। এমনই একটি আর্ন্তজাতিক মোবাইল পাচার চক্রের হদিশ পেল উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে মহম্মদ শাহবাজ আহমেদ নামে এক ব্যক্তিকে বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ৩ টি চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শাহীন আলী নামে এক বাংলাদেশি যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে ভারতীয় এবং বাংলাদেশি ১০ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার হয়। আটক করা হয় তার পাসপোর্টও।
ধৃত দুজনকে এরপর বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারকের নির্দেশে তাদেরকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তারা দুজন আর্ন্তজাতিক মোবাইল ফোন পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এই কারবারে শুভদীপ সাহা নামে বনগাঁর এক যুবকও জড়িত বলে ধৃতরা পুলিশকে জানায়।
ধৃতদের দেওয়া বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ শুভদীপকেও গ্রেপ্তার করে। এরপর শুভদীপের বনগাঁর বাড়ি এবং শাহবাজের বাগুইআটির বাড়িতে তল্লাসী চালিয়ে পুলিশ আরও ২৭ টি চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। বাগদার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক স্পর্শা নিলাঙ্গী এদিন জানান, এই ৩ পাচারকারীর মাধ্যমে চোরাই মোবাইল বাংলাদেশে পাচার হতো।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা, এমনকি ভিন রাজ্য থেকে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন প্রথমে শাহবাজের বাগুইআটির বাড়িতে জড়ো করা হতো। সেখান থেকে শাহবাজের হাত ধরে ওই ফোনগুলি বনগাঁয় শুভদীপের বাড়িতে একত্রিত করা হতো।
এরপর এই চোরাই মোবাইল ফোন বাংলাদেশে পাচারের জন্য শুভদীপের বাড়িতে হাজির হতো শাহীন। তার হাত দিয়েই তা বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেতো। উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনগুলি সেই উদ্দেশ্যেই একত্রিত করা হয়েছিল। কিন্তু বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে পাচার আটকে দেয় গোপালনগর থানার পুলিশ।
এই ফোনগুলি একবার বাংলাদেশে পাচার হয়ে গেলে, তা আর ফেরত আনা পুলিশের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে, এর আগে তারা একাধিকবার চোরাই মোবাইল ফোন ভারত থেকে বাংলাদেশ পাচার করেছে। এই পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন