সমকালীন প্রতিবেদন : ভালো আচরণের জন্য ৩৯ দিন আগেই জেল থেকে মুক্তি পেলেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিং সিধু। এক বছর বা দু'বছর নয়, দীর্ঘ ৩৫ বছরের পুরনো একটি মামলায় তাঁর জেল হয়েছিল। শনিবার দুপুরে পাতিয়ালা সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান পঞ্জাবের এই প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
১৯৮৮ সালের ঘটনা। সিধু এবং তাঁর বন্ধু রূপিন্দর সিং সিধু রাস্তার মাঝখানে গাড়ি রেখে চলে যাওয়ায় মারুতিচালক এক বৃদ্ধ তাঁর প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, কথা কাটাকাটির সময় গুরনাম সিং নামের ওই বৃদ্ধকে সপাটে থাপ্পড় মারেন সিধু। মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান ওই বৃদ্ধ।
এই ঘটনায় ওই সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও নিম্ন আদালত প্রমাণের অভাবে সিধু এবং তাঁর সহযোগীকে বেকসুর খালাস করে দেয়। পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে অবশ্য সিধু দোষী সাব্যস্ত হন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিধু সুপ্রিম কোর্টে গেলে শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দেয়।
নিহতের পরিবার রায় পুনর্মূল্যায়ন করার আর্জি জানায়। এই মামলায় ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করার অভিযোগে সিধুকে এক বছরের সাজা শোনায় সুপ্রিম কোর্ট। যদিও সিধু অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু প্রত্যক্ষ স্বাক্ষ্যপ্রমাণ সিধুর বিপক্ষে যায়। আদালতও তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, সিধুর মতো একজন বক্সার, খেলোয়াড়ের চড়ে কারও মৃত্যু হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
সিধু এক সময় বিজেপি করলেও পরে কংগ্রেসে যোগ দেন। পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতিও হন। মূলত তাঁর সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণেই কংগ্রেস ছাড়েন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং। ২০২২ সালে হাত প্রতীক নিয়ে অমৃতসর (পূর্ব) বিধানসভা থেকে লড়ে হেরে যান সিধু।
এর পরের ঘটনা বেশ রোমাঞ্চকর। উত্তেজনার মাথায় একজনকে সিধু চড় মারেন, এটা প্রমাণিত। কিন্তু সেই কারণেই তার মৃত্যু হলো, এটা কতটা সম্ভব। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বছরের পুরনো একটি ঘটনায় ২০২২ সালের ২০ মে পাতিয়ালা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন পঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি সিধু।
আদালত তাঁকে টানা এক বছর কয়েদবাসের সাজার কথা শোনায়। চলতি বছরের ১৯ মে ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জেলের ভিতরে ভাল ব্যবহার করার জন্য আগেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে সিধুকে। সেই অনুযায়ী এদিন দুপুরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন