সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতীয়দের মধ্যে তীব্র কু-সংস্কার নিয়ে স্বামী বিবেকানন্দ বার বার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেই কু-সংস্কারের নতুন নজির সৃষ্টি হলো উড়িষ্যার বালাসোরে। জানা গেছে, অশুভ আত্মা তাড়াতে কুকুরের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হল দুই নাবালক–নাবালিকাকে। ভোজ খেল গ্রামের লোক।
শিশুর প্রথম দাঁত যদি উপরের মাড়িতে গজায়, তাহলে তা নাকি অশুভ লক্ষণ। আর তার প্রভাব কাটাতে হলে রাস্তার কুকুরের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে সেই শিশুর। এমনই কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে অশুভ আত্মার প্রভাব কাটাতে দুই নাবালক–নাবালিকার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হল পথকুকুরের সঙ্গে।
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওড়িশার বালাশোর জেলার সোরো ব্লকের বাঁধসাহী গ্রামে। ১১ বছর বয়সি তপন সিংয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি মেয়ে কুকুরের সঙ্গে। অন্যদিকে, ৭ বছর বয়সি লক্ষ্মীর বিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি ছেলে কুকুরের সঙ্গে।
বালাসোরের আঞ্চলিক সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, তপন এবং লক্ষ্মী দুজনেই ‘হো’ নামে একটি আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস, শিশুর প্রথম দাঁত যদি উপরের পাটিতে গজায়, তাহলে তার উপর অশুভ আত্মার প্রভাব রয়েছে।
সেই কু প্রভাব কাটাতে পথ কুকুরের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। তাতে যদি খারাপ কিছু হওয়ার থাকে, তাহলে সেই সমস্ত ঝড়-ঝাপটা যাবে কুকুরটির উপর দিয়ে। তাই যখন লক্ষ্মী এবং তপনের উপরের পাটিতে প্রথম দাঁত গজাতে দেখা গিয়েছিল, তখন থেকেই তাদের বিয়ের জন্য কুকুর খোঁজা শুরু হয়েছিল।
ওই গ্রামের 'হো' সম্প্রদায়ের যুবক সাগর জানান, 'আমাদের সম্প্রদায়ের বিশ্বাস এবং রীতি মেনে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান করে দুটি বিয়ে দেওয়া হয়। গ্রামের সকলের জন্য খাওয়া দাওয়ারও ব্যবস্থা ছিল।' এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ৭৫ বছরের স্বাধীন ভারতে সভ্যতার বিকাশ কতটা হয়েছে ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন