সমকালীন প্রতিবেদন : এতদিন ধারণা ছিল, আম মানেই বাংলার মালদা আর মুর্শিদাবাদ। কিন্তু অন্যান্য আমের ক্ষেত্রে হলেও ল্যাংড়ার ক্ষেত্রে সেই সরকারি স্বীকৃতি ছিনিয়ে নিলো উত্তরপ্রদেশের বেনারস। বেনারসী ল্যাংড়ার খ্যাতি যদিও বিশ্বনন্দিত। ল্যাংড়া আম নিয়ে বেনারসে একটি গল্প খুবই প্রচলিত।
এক শতাব্দী প্রাচীন শিবমন্দিরে একবার এক সাধু থাকতে এলেন। শিবমন্দিরের পূজারি তাঁকে থাকার অনুমতিও দেন। সাধুর কাছে একটি আমের চারা ছিল। তিনি তা মন্দিরেই রোপন করেন। অতি সুস্বাদু হয় সেই আম। গাছের প্রথম ফল ওই মন্দিরের শিবলিঙ্গের উদ্দেশে পুজো দিয়ে তা কেটে মন্দিরে আগত ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে দান করা হয়।
পরে এই আমের চারা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কথিত আছে, সেই পূজারি নাকি ল্যাংড়া ছিলেন। তাই এই গাছের কলম থেকে বানানো প্রতিটি গাছকে ‘বেনারসী ল্যাংড়া’ বলা হয়। ল্যাংড়া আমের নামকরণ নিয়ে এইরকম একাধিক গল্প রয়েছে।
মালদা জেলায় মোট ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। তার মধ্যে শুধু ৩ হাজার ৪০০ হেক্টর ছবিতে ল্যাংড়া আম চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের বেনারসের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাষ হয় ল্যাংড়া আমের। কেন ল্যাংড়া আমের জিআই তকমা পেলো না মালদা?
রাজ্যের উদ্যান পালন দপ্তরের এক কর্তা বলেন, 'হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগ, ফজলি এগুলি একদম বাংলার নিজস্ব আম। ল্যাংড়া আম নিজস্ব আম কি না তা জোড় গলায় বলা কঠিন। পাশাপাশি আবেদন না করলে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার প্রশ্ন থাকে না। এক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম থাকে।'
রাজ্যের উদ্যান পালন দপ্তরের সহ অধিকর্তা রনজয় দত্ত এসম্পর্কে বলেন, 'এর আগে রাজ্যের তিনটি আম জিআই তকমা পেয়েছে। তবে ল্যাংড়ার ক্ষেত্রে কোনও আবেদন আমাদের পক্ষ থেকেই জানানো হয়নি।' উত্তরপ্রদেশ ল্যাংড়া আমের জিআই তকমা পেয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ বাংলার আমচাষীদের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন