সমকালীন প্রতিবেদন : মতুয়া ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১২ তম আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে রবিবার থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে শুরু হচ্ছে মহা ধর্মমেলা। আর তার আগের দিন শনিবার ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে হাজির হলেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সনুয়াল।
এদিন দুপুরে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে উপস্থিত হয়ে সোজা চলে যান নাটমন্দিরে। সেখানে হরিচাঁদ–গুরুচাঁদ ঠাকুরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন। কামনা সাগরেও যান তিনি। পরে মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত মঞ্চে উপস্থিত হয়ে মতুয়াদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন তিনি।
রবিবার থেকে এবারের মেলা শুরু হবার কথা থাকলেও শনিবার থেকেই মতুয়া ভক্তরা ঠাকুরবাড়িতে হাজির হতে শুরু করেছেন। চিরাচরিত প্রথায় মতুয়া সম্প্রদায়ের গোসাই, পাগল, দলপতিরা ডঙ্কা, কাসর, সিঙা বাজিয়ে, মুখে হরিবোল ধ্বনি দিয়ে ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গন মুখরিত করে তোলেন।
শুক্রবারই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মতুয়া মেলা উপলক্ষ্যে টুইটবার্তায় শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি মতুয়া ধর্মদর্শন সম্পর্কে আগ্রহপ্রকাশ করে সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষদের অগ্রগতি ঘটানোর কথা তুলে ধরেন। সেই ইতিহাসকে পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভূক্ত করার কথা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ঘোষণা করেছিলেন।
এদিন শান্তনু ঠাকুর জানান, দেশ–বিদেশ থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ মতুয়া ভক্ত এবারের মতুয়া মেলায় উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মেলা উপলক্ষ্যে রেল মন্ত্রকের উদ্যোগে দেশজুড়ে মোট ১২ টি এক্সপ্রেস এবং ৩০ জোড়া লোকাল স্পেশাল ট্রেন চালানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি, জাহাজ মন্ত্রকের উদ্যোগে আন্দামান থেকে ১২০০ আসনের একটি স্পেশাল জাহাজ মতুয়া ভক্তদের নিয়ে কলকাতায় আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মতুয়া মেলা দিন দিন আকারে আরও বড় হচ্ছে। আর তা ট্যুরিজিমের দিক থেকেও গুরুত্ব বাড়ছে। এমনই অনুভূতির কথা উল্লেখ করে এদিন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সনুয়াল জানান, মতুয়া ধর্ম মহামেলা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী আগ্রহপ্রকাশ করেছেন। এমন মহামেলায় সামিল হতে পেরেছে নিজেকে ধন্য মনে করেন তিনি।
এদিকে, মতুয়া মেলা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর করা টুইটকে স্বাগত জানিয়ে সারা ভারত মতুয়া মহা সংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর বলেন, মতুয়াদের উন্নয়নে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এপর্যন্ত যা যা পদক্ষেপ করেছেন, তা বলে শেষ করা যাবে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠাকুরনগরে আসা ছাড়া একটি কাজও করেন নি বলে এদিন অভিযোগ করেন মমতা ঠাকুর।
জানা গেছে, আগামীকাল রাত ৮ টা ৪৫ মিনিট থেকে ঠাকুরবাড়ির কামনা সাগরে পুণ্যস্নান শুরু হবে। আর সেই উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ঠাকুরনগরে আসতে শুরু করেছেন মতুয়া ভক্তরা। মতুয়া ভক্তদের স্বাগত জানাতে তৈরি ঠাকুরবাড়ি। উৎসব উপলক্ষ্যে আগামী এক সপ্তাহ ধরে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে মেলা চলবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন