Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ১৮ মার্চ, ২০২৩

ঘূর্ণিঝড়ের নাম‌কর‌ণের ইতিবৃত্ত

Naming-of-cyclones

সমকালীন প্রতিবেদন : পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ার কারণে অর্থাৎ বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং আরও বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও শক্তি দুটি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

এর প্রভাবে 'আমফান' এবং 'ইয়াস' এর মতো দুটি ভয়ংকর ঝড়ের নজির মিলেছে। এইভাবে ঘূর্ণিঝড়ের পরিমাণ বেড়ে চলায় কপালে যথেষ্ট চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, বিশেষত উপকূলবর্তী মানুষদের মধ্যে।

কিন্তু আমরা কি একবারও ভেবে দেখেছি যে, সম্প্রতি আমরা ঝড়ের যে নামগুলি শুনছি সেই নামগুলি কারা ঠিক করে ও কোথা থেকে ঠিক হয়। বিগত 'আমফান' বা 'ইয়াস' থেকে শুরু করে আগামী ঘূর্ণিঝড় 'মান্দাসা' বা 'মোচা' পর্যন্ত। সব নামই এক–একটি দেশের দেওয়া।

ঝড়ের নাম দেওয়ার ক্ষেত্রে মেনে চলা হয় একটি নিয়ম। নামকরণের রীতি অনুযায়ী একেকটি দেশ একেকটি ঝড়ের নামকরণ করে থাকে। আগত শুধুমাত্র একটি বা দুইটি ঝড়ের নামকরণই করা হয়নি। এই তালিকায় আছে আরও পাঁচটি ঝড়ের নাম। যদিও সেই সব ঝড়গুলি কবে ও কিরকম আকারে আসবে, তা এখনও বুঝে ওঠা যায়নি। আগত ঝড়গুলির নাম যথাক্রমে– 'মোচা', 'বিপর্যয়', 'তেজ', 'হামুন' এবং 'মিধিলি'।

পাঁচটি ঝড়ের নাম রেখেছে পাঁচটি দেশ। যার মধ্যে 'মোচা' নামটি রাখা হয়েছে ইয়েমেনের দ্বারা। 'বিপর্যয়' নামটি দিয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। এর পরের ঝড় 'তেজ' এর নামটি রেখেছে ভারতবর্ষ। 'হামুন' নামকরণ করেছে ইরান। আর সর্বশেষে 'মিধিলি' নামটি রেখেছে ভারতের আর এক প্রতিবেশী দেশ মায়ানমার। প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনও প্রকারের সংখ্যা, বৈজ্ঞানিক নাম বা ভূতাত্ত্বিক টার্ম এর উপর নির্ভর না করে সাধারণ একটি নাম রাখলে তা মনে রাখা অত্যন্ত সহজ হয়ে ওঠে।

এছাড়াও মানুষজনকে সচেতন করতেও নাম কাজে লাগে। যেমন কোনও অঞ্চলে যদি কয়েকদিন অন্তর অন্তরই একাধিকবার ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়, তাহলে এই নামগুলির সাহায্য নিয়ে অনেক বেশি পরিমাণ মানুষদেরকে সচেতন করা সম্ভব। অনেকের ভুল ধারণা আছে যে, একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পরে বা তার গতিবিধি ধরা পড়ার পরেই তার নামকরণ করা হয়, কিন্তু আসলে তা নয়।

বিভিন্ন দেশ মিলে অগ্রিম অনেকগুলি নাম ঠিক করে রাখে। পরে ভবিষ্যতে যখনই একটি করে ঝড়ের সৃষ্টি হয়, তখন তালিকা অনুসারে তাকে একটি নাম দিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই নামকরণেরও কয়েকটি বিধিনিষেধ আছে, যেগুলি মেনে চলতে হয়। 

ঘূর্ণিঝড়ের নাম এমনভাবে বাছতে হবে যে, বিশ্বের কোনও জনগোষ্ঠীর বা ধর্মের ভাবাবেগে যেন কোনোরকম আঘাত না করে। নামটিকে এমন রাখতে হবে, যাতে তা মনে রাখতে সুবিধা হয়। কোনও প্রকারের নিষ্ঠুর বা কর্কশ নাম যাতে না রাখা হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নামটিকে ছোট ও সর্বোচ্চ আট অক্ষরের মধ্যে হতে হবে।

এই নামকরণ প্রক্রিয়ার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, এই নামকরণ প্রক্রিয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার সমস্ত দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং যোগাযোগ ভালো হয়। সুসম্পর্ক বজায় থাকে। আর এছাড়াও প্রতিটি ঝড়কে আলাদা আলাদা করে চিহ্নিত করা তো আছেই।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন