Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩

বিলাসবহুল স্পীডবোট কিনে বিতর্কে জড়ালেন বিধায়ক

 

Luxury-speedboat

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকায় বিলাসবহুল স্পীডবোট কিনে বিতর্কে জড়ালেন এলাকার বিধায়ক। শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না দলের কর্মীরাও। এলাকার মানুষের নাম করে নিজের শখ মেটানোর জন্য এমন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যদিও বিধায়কের দাবি, এলাকার দুর্গত মানুষদের সহযোগিতার জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিজের এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকারিভাবে বছরে ৬০ লক্ষ টাকা পান রাজ্যের প্রতিটি বিধায়ক। দক্ষিন ২৪ পরগনার গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলও ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সেই টাকা পেয়েছেন। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে এলাকার উন্নয়ন না করে তাঁর সিংহভাগ টাকা দিয়েই ২০ আসনবিশিষ্ট একটি বিলাশবহুল স্পীড বোট কিনেছেন বিধায়ক। আর তাকে ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

গোসাবা ব্লকটি অনেকগুলি দ্বীপ বেষ্টিত। প্রায় প্রতিবছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হয় নদীবেষ্টিত এই এলাকার বাসিন্দাদের। আর এই দুর্যোগের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট, জেটিঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে পরে। এর পাশাপাশি, এই ব্লকের সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছেন। এলাকায় গভীর নলকূপের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। 

শুধু তাই নয়, এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, এই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার নদীবাঁধের অবস্থা বেহাল। পূর্ণিমা বা অমাবস্যার ভরা কটালে নদীবাঁধ ভেঙে গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পরার ঘটনা অনেক সময়েই ঘটে। এইরকম একটি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের এই সমস্যা, প্রয়োজন না মিটিয়ে এলাকার বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিলাশবহুল স্পীডবোট কেনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে বছর দেড়েক আগে সুন্দরবনের মানুষের জন্য ভুটভুটিতে একটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি চালনার জন্য যে পরিমাণ জ্বালানী খরচ প্রয়োজন, তা যোগান দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় অচিরেই তা সেটি বন্ধ হয়ে যায়। 

এক্ষেত্রে এই স্পীডবোট চালানোর মতো জ্বালানী খরচ কে যোগাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।‌ বিধায়কের এই ধরনের প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের পাশ করা উচিৎ হয় নি বলে মনে করেন রাজ্যের প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নষ্কর।

যদিও এই স্পীড বোট কেনার পিছনে বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের যুক্তি, গোসাবার প্রত্যন্ত দ্বীপাঞ্চলগুলি থেকে প্রসূতি মা, সাপে কাটা রোগী, হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের এই স্পীডবোটে করে দ্রুত গোসাবা কিম্বা কলকাতার হাসপাতালে পাঠানোর ক্ষেত্রে খুব কাজে আসবে। আর সেকথা চিন্তা করেই সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই স্পিডবোট কেনা 

জানা গেছে, প্রায় ৫১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ক্যালকাটা স্পোর্টসবোট ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেড এই স্পীড বোটটি তৈরি করেছে। এতে দুটি এসি রয়েছে। এছাড়াও, ভিতরটি আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে। 

এখানকার এক দ্বীপ থেকে আর এক দ্বীপে দ্রুত পৌঁছতে পুলিশ বা বন দপ্তর যে ধরনের স্পীডবোট ব্যবহার করে থাকে, তার তুলনায় এটি অনেক আধুনিক। তবে এই দামি স্পিড বোট এলাকার সাধারণ মানুষের উপকারে কতটা লাগবে, সেটাই এখন দেখার।






‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন