সমকালীন প্রতিবেদন : বিশ্বের সবথেকে বেশি জনসংখ্যা সম্পন্ন দেশ হলো চীন। কম যাচ্ছে না ভারতও। আর এত জনসংখ্যা সম্পন্ন দেশে মানুষজনের যে রোগ ব্যাধি লেগেই থাকবে, তা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এর মধ্যে একটা রোগ যেটা নিয়ে মাথাব্যথা সরকার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সকলের। তার নাম হলো ডায়াবেটিস। বর্তমান সময়ে সরকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন এনজিও এবং ডাক্তারেরা কাজ চালাচ্ছেন সাধারণ মানুষদের মধ্যে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে।
ডাক্তারদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দিনের প্রথম খাবার যাকে আমরা প্রাতরাশ বলে থাকি, তাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সকালের খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সেই জন্যই ডায়াবেটিস রোগীদের সকালে কি কি খাওয়া উচিত তা জানাচ্ছেন ডাক্তার এবং পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক, তাদের জানানো এমন কিছু খাবারের নাম, যা কিনা নিজেদের প্রাতরাশে রাখতে হবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।
১| বাদাম- বাদাম কেবলমাত্র ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নয়, সকলের জন্যই অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার, যা কিনা শরীরে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও শক্তি যোগায়। বাদামে থাকে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। সেই জন্য যারা প্রতিদিন শরীর চর্চা করেন এবং জিমে যান, তারা নিজেদের খাদ্য তালিকায় বাদাম অবশ্যই রাখেন। প্রতিদিন রাতের বেলায় কয়েকটি বাদাম জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে উঠে তা খেলে সারাদিনের কাজের জন্য তা শরীরে শক্তি যোগান দেবে এবং ক্লান্তি দূর করবে।
২| চিয়া বীজ- চিয়া বীজ হলো এমন এক খাবার, যাতে কিনা রয়েছে ভরপুর পরিমাণে ফাইবার। এতে থাকা ফাইবারের কারণে খাবার হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত জলে ভিজিয়ে চিয়া বীজ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে একদম নিয়ন্ত্রণে।
৩| ওটস- ওটস হল ডায়াবেটিক পেশেন্টদের জন্য একদম উপযোগী ব্রেকফাস্ট। ওটসে থাকে প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট। সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যার কারণে একবার ওটস খেলে অনেকক্ষণ ধরেই পেট ভর্তি থাকে। ফলে সহজে খিদে পায় না। এর কারণে রক্তে শর্করার মাত্রাও থাকে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও, যারা ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করেন, তারাও নিজেদের ব্রেকফাস্ট হিসেবে ওটসকে পছন্দ করে থাকেন।
৪| ডিম- ডিমকে বলা হয়ে থাকে প্রোটিন এবং এনার্জির কারখানা। সকালের জলখাবারে নিয়মিত ডিম অনায়াসেই খেতে পারেন ডায়াবেটিসের রোগীরা। প্রতিদিন সকালে নিয়মিত একটি করে ডিম সারাদিনের কাজের জন্য শরীরে শক্তি যোগাবে প্রচুর পরিমাণে। সেইসঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করবে। তবে কেউ চাইলে ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে কেবলমাত্র সাদা অংশ খেতে পারেন। রোজ একটি করে ডিম শরীরে সুস্বাস্থ্য বজিয়ে রাখবে ভালোভাবে।
৫| টক দই এবং ব্লুবেরি ও স্ট্রবেরির স্মুদি- সবশেষে টক দই দিয়ে ব্লুবেরি অথবা স্ট্রবেরির মতো যেকোনও বেরি দিয়ে স্মুদি বানিয়ে খেতে পারেন অনায়াসেই। টক দইতে যেহেতু থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং সেই সঙ্গে চিনির পরিমাণ প্রায় থাকেই না, সেই জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এটি। সেই সঙ্গে বেরি ফলে থাকা বিভিন্ন রকম ভিটামিন শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফলে প্রাতরাশ সারার পরে টক দই এবং বেরি ফল মিশিয়ে তৈরি এক গ্লাস মুদি বাকি সারাদিনটা বেশ চনমনে করে দেবে আপনাদের।
এই হল একটি ছোট তালিকা যা কিনা ডায়াবেটিক রোগীরা নিজেদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মেনে চলতে পারেন। প্রাতরাশে থাকা এই খাবারগুলি যেরকম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে, সেইরকমই মুখের স্বাদ পরিবর্তন করে এক আলাদা অনুভূতিও দেবে মাঝে মাঝে। তাহলে আর দেরি না করে এখন থেকেই লেগে পড়ুন এই সুস্বাদু খাবারগুলির সঙ্গে নিজেদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন