সমকালীন প্রতিবেদন : পাকা সোনার উপর কেন্দ্রীয় সরকারের মাত্রাতিরিক্ত আমদানি শুল্ক এবং জিএসটি চাপানোর ফলে চোরাবাজার এবং ন্যায্য বাজারের মধ্যে সোনার দামের ব্যাপক ফারাক তৈরি হচ্ছে। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চোরাপথে ভারতে সোনা পাচারের ঘটনা প্রচুর পরিমানে বেড়ে গেছে। এমনই দাবি বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির।
রবিবার সংগঠনের বনগাঁ শাখার ১৯ তম সাধারণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল বনগাঁয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সংঘের সাধারণ সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দার, সংগঠনের বনগাঁ শাখার সম্পাদক বিনয় সিংহ সহ সংগঠনের বিভিন্ন পদাধিকারিরা।
এদিন টগরচন্দ্র পোদ্দার অভিযোগ করেন, বর্তমানে কেন্দ্র সরকার সোনার উপর ১২ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং ৩ শতাংশ জিএসটি ধার্য করে রেখেছে। এর ফলে চোরাপথে ভারতে আসা সোনার থেকে সরকারি নিয়ম মেনে কেনা সোনায় কিলোপ্রতি প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বেশি পরছে। আর এই কারণেই বিদেশ থেকে চোরাপথে সোনা ভারতে পাচারের প্রবনতা বেড়ে গেছে।
এর পাশাপাশি, আগামী পয়লা এপ্রিল থেকে কেন্দ্র সরকার প্রতিটি সোনার গয়নার ক্ষেত্রে হলমার্ক বাধ্যতামূলক করেছে। অথচ দেশের ৭৫৬ টি জেলার মধ্যে মাত্র ৩৩১ টি জেলায় এই হলমার্ক সেন্টার রয়েছে। অর্থাৎ দেশের ৫০ শতাংশেরও কম জেলায় হলমার্ক সেন্টার রয়েছে। এই অবস্থায় হলমার্ক বাধ্যতামূলক করা একপ্রকার দ্বিচারিতা। এর পাশাপাশি, নকল হলমার্ক তৈরি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির বনগাঁ শাখার সম্পাদক বিনয় সিংহ জানান, এদিনের সম্মেলন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে সংবাদপত্রে প্রকাশিত সোনা–রুপোর দৈনিক দর অনুযায়ী ক্রেতাদের কাছ থেকে দাম নিতে হবে, গয়না তৈরির উপর ১৩ থেকে ২০ শতাংশ হারে মজুরি নিতে হবে।
এছাড়াও, কারিগরদের নির্দিষ্ট হারে মজুরি দিতে হবে, সোনার দোকানদারেরা তাদের সুবিধামতো সপ্তাহে একদিন দোকান বন্ধ রাখতে পারবেন, দোকানদারেরা তাদের ক্রেতাদের ইচ্ছেমতো উপহার দিতে পারবেন। বিনয় সিংহ আরও জানান, সোনার ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে কারিগরদের দিকেও নজর দিতে হবে।
এদিনের সম্মেলনে বনগাঁ মহকুমার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া এবং কলকাতা জেলার মোট প্রায় ৭০০ প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছিলেন। এছাড়াও, হাজির ছিলেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অর্ক পাঁজা, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, পুরপ্রধান গোপাল শেঠ সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।
এদিন সংগঠনের বনগাঁ শাখার যে নতুন কমিটি গঠিত হয়, সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে ফের সম্পাদক পদে মনোনীত হন বিনয় সিংহ। এছাড়া, সভাপতি এবং কার্যকরী সভাপতি পদে মনোনীত হন যথাক্রমে কল্যান তারণ এবং গোপাল নন্দী। আগামী ৪ বছর তাঁরা এই পদের দায়িত্ব সামলাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন