Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতায় ভরা আলুর খোসা

 

potato-peeler

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌ডাক্তার এবং বাড়ির বড়রা আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে সবজি খেতে বলেন সব সময়। তবে কারো কারো সবজি খাওয়া পছন্দ হলেও এমন অনেকেই থাকেন, যাদের কিনা সবজি একদমই মুখে রোচে না। তবে কিছু সবজি এমন থাকে, যা কিনা প্রায় সকলেরই পছন্দ। আর সেই তালিকার একদম শীর্ষে রয়েছে আমার–আপনার সকলের পছন্দের আলু। 

ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি স্থানেই খাবারে আলুর মাহাত্ম্য কতটা, তা আমরা সকলেই জানি। বিশেষত অন্য সকলের থেকে আমরা বাঙালিরা তো আলু অন্ত প্রাণ। তবে আমাদের এই পছন্দের আলু আমরা খাবার রান্না করার সময় ব্রাত্য করে রাখি আলুর খোসাকে। 

আলু রান্না করার আগে কিংবা সেদ্ধ করার পর ছাড়িয়ে ফেলে দেওয়া হয় আলুর খোসাকে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের এই ফেলে দেওয়া আলুর খোসাতেই থাকে আলুর থেকেও বেশি পরিমাণ অনেক রকম পুষ্টিগুণ এবং শরীরের জন্য উপকারী তত্ত্ব। 

চলুন জেনে নিই সেই পুষ্টিগুণ গুলি, যেগুলি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে পারে।

১| ত্বকের যেকোনও সমস্যা সমাধানে এবং তার যত্ন নেওয়ার জন্য আলুর খোসা অত্যন্ত উপকারী। ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে আলুর খোসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও মুখে ফর্সা ভাব আনতে, চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল থেকে মুক্তি পেতে কিংবা ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের চিকিৎসা করতেও আলুর খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। 

ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আলুর রসের মধ্যে তুলোর বল ডুবিয়ে তা ত্বকে প্রয়োগ করা হয়। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলেই বেশ সহজে পাওয়া যেতে পারে ঝকঝকে পরিষ্কার মুখ।

২| যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে আলুর খোসা হার্টকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। জৈব আলুর খোসায় থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম যা শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

৩| আলুর খোসায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি–৩। আলুর খোসায় থাকা এই উপাদান শরীরের কোষগুলিকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগান দেয়। এছাড়াও, একটি আলুর খোসায় খোদ আলুর তুলনায় বেশি পরিমাণ ফাইবার থাকে, যা কিনা খাবার হজম করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সঙ্গে সঙ্গে হৃদরোগ, টাইপ–২ ডায়াবেটিস এবং কোলন ক্যান্সারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ রোগের সম্ভাবনাকেও কমিয়ে দেয় ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

৪| আলুর খোসা শরীরের হাড়ের গঠন এবং শক্তি তৈরি করতে অত্যন্ত উপযোগী। আলুর খোসায় থাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এর মতো বিভিন্ন খনিজ উপাদান। যেহেতু একটি মনুষ্য শরীরের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম কেবলমাত্র হাড়ের মধ্যেই থাকে, সেই জন্য আলুর খোসা নিয়মিত খেলে শরীরের হাড় অত্যন্ত মজবুত হয় এবং শারীরিক বল বাড়ে।

৫| আলুর খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্য। ফ্ল্যাভোনয়েডের একটি প্রাকৃতিক উৎসস্থল বলা হয়ে থাকে আলুর খোসাকে। এটি হলো এক ধরনের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, যাতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। আর এই প্রচুর পরিমাণে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণেই আলুর খোসা শরীরকে বিভিন্ন রকম রোগ ব্যাধির সংক্রমণ থেকে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।

আজ আমরা জানতে পেরে গেলাম যে, যেই আলুর খোসাকে এতদিন ধরে আমরা ব্রাত্য করে রেখেছি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাওয়া-দাওয়া থেকে, সে আসলেই আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী। 

তাহলে আজ থেকে আর কোনওরকম ভুল নয়। প্রতিদিনকার খাবারের তালিকায় যখনই থাকবে আলু, তখনই তার সঙ্গে অবশ্যই রাখতে হবে তার খোসাকেও। তাহলেই পাওয়া যাবে খাবারে আলুর সম্পূর্ণ স্বাদের সঙ্গে তার পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা।



‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন