সমকালীন প্রতিবেদন : মাটি ফেলে জলাভূমি এবং নয়ালজুলি ভরাট করার অভিযোগ উঠলো এক প্রমোটারের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে প্রতিবাদ করতে গেলে তৃণমূলের এক কাউন্সিলরের নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা হুমকি দিচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলে বিডিও–র কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত প্রতিবাদপত্র জমা পরলো।
জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা ব্লকের চাঁদপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মন্ডলপাড়া এলাকায় হাঁসার বিল নামে একটি পুরনো জলাভুমি রয়েছে। বর্ষার সময় এই বিলের মাধ্যমে বর্ষার অতিরিক্ত জল বেরিয়ে গিয়ে স্থানীয়দের বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে।
বনগাঁর এক ব্যবসায়ী ওই এলাকায় যশোর রোডের ধারে প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা জমি কেনেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ওই জমি সংলগ্ন জলাভূমি মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। নয়ানজুলিও ভরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
এর ফলে আগামী বর্ষায় অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যেতে না পেরে এই এলাকায় কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি করবে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন দোগাছিয়া, মন্ডলপাড়া এবং মনমোহনপুর–এই গ্রামের কৃষক এবং সাধারণ গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, এব্যাপারে প্রতিবাদ করতে গেলে জমির বর্তমান মালিকের ঘনিষ্ঠ এবং বনগাঁ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পাপাই রাহার নেতৃত্বে কিছু সমাজবিরোধী গ্রামবাসীদের উপর চড়াও হয়।এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছে। এব্যাপারে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে গাইঘাটা বিডিওর কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে জমির বর্তমান মালিক দাবি করেছেন, এখানকার ঘটনার সঙ্গে পাপাই রাহা কোনওভাবেই জড়িত নয়। আর এখানে যে প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা জমি কেনা হয়েছে, সেখানে কোনও জলাজমি নেই। পুরোটাই বাস্তু, ডাঙা এবং তিন ফসলি জমি। ফলে জমাভূমি ভরাটের কোনও প্রশ্ন নেই।
এব্যাপারে গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা গোবিন্দ দাস জানিয়েছেন যে, তিনিও এই ধরনের অভিযোগ পেয়েছেন। জমাভূমি ভরাট করা অন্যায় কাজ। আর এর সঙ্গে যারা জড়িত, প্রশাসন যেন তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে, প্রশাসনকে সেইরকমই বলা হয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে।
এলাকার বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার এব্যাপারে গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূলের নেতারা জমি মাফিয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মন্ডলপাড়া এলাকায় যেভাবে অবৈধভাবে জলাজমি ভরাট করা হচ্ছে, তা বন্ধ করতে যা যা আইনী পদক্ষেপ করার তা করা হবে।
জলাভূমি ভরাট এবং তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরের হুমকির মুখে পরতে হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে এই বেআইনী কাজ বন্ধ করতে হবে। না হলে আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন