সমকালীন প্রতিবেদন : প্রেমের ফাঁদে ফেলে বনগাঁ থেকে ব্যাঙ্গালোরে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক নাবালিকাকে। অবশেষে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় উদ্ধার করা সম্ভব হল ওই নাবালিকাকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রতারক প্রেমিককে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বনগাঁর গান্ধীপল্লী এলাকার বছর ১৬ বয়সের এক নাবালিকা চাকরির জন্য মছলন্দপুর এলাকার একটি ক্যাম্পে শারীরিক সক্ষমতা তৈরি করার জন্য অনুশীলন করতে যেত। সম্প্রতি সেই কেন্দ্রে যোগ দেয় সন্দীপ গোর নামে বাঁকুড়ার এক যুবক।
মাত্র ১৫ দিনের আলাপেই তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। নাবালিকা ওই যুবককে বিশ্বাস করে এরপর গত ১৭ নভেম্বর ওই যুবকের সঙ্গে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যায়। মেয়ের সন্ধান পেতে এরপর নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে বনগাঁ থানায় ওই যুবকের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পর হঠাৎ করেই একদিন ওই নাবালিকা একটি অচেনা নম্বর থেকে বাড়িতে ফোন করে। সে জানায়, যে যুবকের সঙ্গে সে পালিয়ে এসেছিল, সেই যুবক তাকে ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখেছে। বলে গেছে সে কাজের জন্য ত্রিপুরা যাচ্ছে।
ওই নাবালিকা আরও জানায় যে, সেই ঘরে আরও কয়েকজনকে আটকে রাখা হয়েছে। ফলে, তার সন্দেহ হয় যে, ভালোবাসার নাম করে ওই যুবক তাকে পাচারের উদ্দেশ্যে সেখানে আটকে রেখেছে। কিন্তু ব্যাঙ্গালোরের কোথায় তাকে রাখা হয়েছে, তা সে বুঝতে পারছে না।
এরপর বনগাঁ থানার পুলিশ মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্রাক করে জায়গাটি নির্দিষ্ট করে। নাবালিকাকে উদ্ধারের উদ্দেশ্যে পুলিশ বনগাঁর চড়ুইগাছি লাইটহাউস সোস্যাইটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এই সংস্থার পক্ষ থেকে এরপর দিল্লির একটি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তারা এরপর ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে ওই নির্দিষ্ট বাড়ি থেকে ২৪ জানুয়ারি নাবালিকাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি, গ্রেপ্তার করা হয় প্রতারক যুবককেও।
উদ্ধারের পর থেকে ওই নাবালিকাকে স্থানীয় একটি হোমে রাখা হয়। ওই নাবালিককে বনগাঁয় নিয়ে আসতে ব্যাঙ্গালোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় বনগাঁ পুলিশের একটি বিশেষ দল।
শুক্রবার রাতে নাবালিকাকে নিয়ে বনগাঁয় পৌঁছায় বনগাঁ থানার বিশেষ দল। ব্যাঙ্গালোরের পাশাপাশি বনগাঁ থানার পক্ষ থেকে ওই প্রতারক যুবকের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা রুজু করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন