সমকালীন প্রতিবেদন : দিনের পর দিন, মাসের পর মাস লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বা পেনশন চালু করতে একটা মাত্র সইয়ের আশায় কারো পিছন পিছন দিনের পর দিন ঘুরে বেড়ানো। পেনশন ভোক্তা বয়স্ক মানুষদের এমন অবস্থা দেখতে একটা সময় অভ্যস্ত ছিলাম আমরা। তবে দিন পাল্টেছে। ওড়িশার এক পঞ্চায়েত প্রধানের উদ্যোগে এবার ড্রোনের মাধ্যমে পৌঁছলো পেনশনের টাকা।
শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি। এতদিন ধরে এমন খবর আমরা কেবলমাত্র দেখে এসেছি বিদেশের ক্ষেত্রে। তবে এই ঘটনা মোটেও বিদেশের কোনো জায়গার নয়, বরং ওড়িশার প্রত্যন্ত এক গ্রামের খবর এটি। ওড়িশার একজন বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তির জন্য ড্রোনের মতো আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগালেন সেখানকার এক পঞ্চায়েত প্রধান।
সংবাদ মাধ্যম এনডি টিভি সূত্রে জানা গেছে, ওড়িশার পশ্চিম অংশের নুয়াপাড়া জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে হেতারাম সতনামি নামের একজন বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি বসবাস করেন। গ্রামের এক প্রত্যন্ত এলাকার ঘন জঙ্গলের মধ্যে বসবাস তাঁর। প্রতিমাসে পেনশন পাওয়ার জন্য ঘন জঙ্গলের ভেতর থেকে প্রায় দু কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে আসতে হতো তাঁকে। তাঁর অক্ষমতার কথা চিন্তা করেই পঞ্চায়েত প্রধানের বিশেষ উদ্যোগে তাঁর জন্য চালু হলো এই পরিষেবা।
এখন থেকে আর দু কিলোমিটার ঘন জঙ্গল পেরিয়ে কিংবা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট পেতে হবে না হেতারামজীকে। আকাশ পথে বাড়ির ঠিকানায় উড়ে এসেই পেনশনের টাকা দিয়ে যাবে ড্রোন। এ মাস থেকেই ড্রোনের মাধ্যমে তাঁর বাড়িতে পেনশনের টাকা পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা শুরু হয়েছে।
উড়িষ্যার ভালেশ্বর পঞ্চায়েত এলাকার ভুতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হেতারাম সতনামি। জন্ম থেকেই কিছু শারীরিক সমস্যার কারণে বিশেষভাবে সক্ষম তিনি। আর সেই কারণেই ওড়িশার মধুবাবু পেনশন যোজনা নামক প্রকল্পে টাকা পেতেন তিনি।
তবে প্রতিমাসে পেনশন নিতে আসার সময় শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া হেতারামকে দেখে তার সুবিধার্থের কথা চিন্তা করেই এই গোটা কর্মকাণ্ডের আয়োজন করেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সরোজ আগরওয়াল। পঞ্চায়েত প্রধান সরোজ আগরওয়াল নিজের উদ্যোগেই এই ড্রোন কিনে বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য এই পরিষেবা চালু করেছেন।
তাঁর কাছে এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সোশ্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন জায়গাতেই তিনি বিদেশে এইরকম পরিষেবার কথা দেখে আসছেন। সেখান থেকেই তাঁর মাথায় এসেছে এই বুদ্ধি। তাঁর মতে, বিদেশে যদি বয়স্ক এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য এই রকম পরিষেবা চালু হতে পারে, তবে আমাদের এখানে কেন নয়।
বিশেষভাবে সক্ষম এবং বয়স্ক মানুষদের কথা চিন্তা করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পঞ্চায়েত প্রধানের চালু করা এহেন উদ্যোগকে সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। দল এবং রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে এমন মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করছেন সবাই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন