Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

বার্ধক্য ‌আটকাতে কি করবেন ?

 

What-to-do-to-stop-aging

সম্পদ দে : সাধারণত ৬০ বছরের কোটা পেরোলেই কাউকে বার্ধক্যের আওতায় ফেলা হয়ে থাকে। তবে বর্তমান যুগের ব্যাপার একটু আলাদা। অতিরিক্ত পরিশ্রম, পরিবেশ দূষণ, ঘুমের অভাব, রোজকার খাদ্যাভাস এবং শরীরের যত্ন না নেওয়ার মতো বিভিন্ন কারণেই আজকাল ৩৫ থেকে ৪০ বছর বয়স হলেই ক্লান্তি ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে শরীরে বার্ধক্য দেখা দেওয়া শুরু করে দেয়।

প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে প্রতিটি জিনিসেরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। ঠিক তেমনই বার্ধক্যেরও একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। তবে প্রকৃতির নিয়মের বিপরীতে গিয়ে, শরীরে অকাল বার্ধক্য ডেকে আনতে পারে বহু সমস্যা ও অজানা রোগব্যাধি।

বর্তমান যুগে বহু লোকেই এই অকাল বার্ধক্যের সমস্যায় ভুগছেন। আজকালকার অতিব্যস্ত জীবনে দূষণ, অতিরিক্ত পরিশ্রম এবং পরিশ্রমের পরে পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে তৈরি হওয়া ক্লান্তি হল এই অকাল বার্ধক্যের একটি অন্যতম কারণ।

এর ফলে শরীরে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা। যেমন, নিজের এবং শরীরের যত্ন না নেওয়ায় মাথার চুল ধীরে ধীরে রুক্ষ হতে থাকবে, যাতে কিনা ভবিষ্যতে দ্রুত চুল পেকে যাওয়া এবং টাক পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কম বয়সেই পিঠে, কোমরে এবং হাঁটুতে ব্যথা দেখা দিতে পারে, যা কিনা অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে। এছাড়াও, অকাল বার্ধক্যের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং শরীরে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

কেবলমাত্র এগুলিই নয়, এছাড়াও আরও বহু শারীরিক এবং সেই সঙ্গে মানসিক সমস্যার সম্মুখীন করতে হতে পারে এই অকাল বার্ধক্যের কারণে। তাহলে এই বার্ধক্য থেকে ছাড়া পাওয়ার কি কোন উপায় নেই? আছে বৈকি। আজকের প্রতিবেদনে আমরা এটাই জানবো যে, কিভাবে জীবন যাপন করলে আমরা এই অকাল বার্ধক্যের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবো। 

গবেষকরা এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে বলছেন, শরীরে অকাল বার্ধক্য আটকাতে গেলে মেনে চলতে হবে বেশ কিছু বিধি নিষেধ। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই উপায়গুলি।

১| বাইরের ফাস্টফুড খাওয়া যতটা সম্ভব কমিয়ে ফেলুন। নিয়মিত মরশুমি সবজি এবং ফলের রস খান। মরশুমি ফল এবং সবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কিনা শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচায় এবং শরীরকে যৌবন ও তরতাজা রাখে।

২| ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড আছে এমন খাবার নিজেদের তালিকায় রাখুন। যেমন, টক দই, দুধ, গ্রিন-টি, মাছ ইত্যাদি।

৩| রাত জাগা চলবে না একদমই। শরীরে ঘুমের ঘাটতি হলে বাড়বে ক্লান্তি এবং সেই সঙ্গে শুরু হবে হজম এবং বিভিন্ন হৃদরোগের সমস্যা। ফলে দিনে অন্তত ৭-৮ ঘন্টা ঘুম দিতেই হবে। এতে হৃদযন্ত্রও ভালো থাকবে এবং সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতাও বাড়বে। ফলে শরীর ও মন দুটোই সতেজ থাকবে।

৪| বাড়ির প্রতিদিনকার কাজ করার সময় বারবার জল এবং নোংরা ঘাঁটার কারণে হাতের চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই কাজ করার আগে এবং পরে হ্যান্ড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন, যাতে হাতের চামড়া রুক্ষ না হয়ে যায়।

৫| বাইরে বেরোলে সূর্য থেকে নিঃসৃত ইউভি রশ্মি চামড়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ব্যাপকভাবে। তাই এখন থেকে বাড়ির বাইরে বেরোলে শরীরের চামড়াকে ইউভি রশ্মি থেকে বাঁচাতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ছাতা এবং সানগ্লাস রাখুন সঙ্গে।

৬| শরীরের মধ্যে মুখ এমন একটি অঙ্গ, যেখানকার চামড়া কোঁচকানো শুরু করলে আসল বয়সের থেকে অনেক বেশি বয়স্ক লাগে। তাই এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতে অ্যান্টিএজিং ক্রিম ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

৭| শরীরে জলের মাত্রা সর্বক্ষণ সঠিক থাকা উচিত। কারণ, শরীরে জলের মাত্রা কম থাকলে শরীর কাজ করবে না সঠিকভাবে। ফলে বেশি করে জল খান। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ২-৩ লিটার জল অবশ্যই পান করা উচিত।

৮| প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভালো করে হাত, মুখ এবং পা পরিষ্কার করে ধুয়ে, নাইট ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে তারপর ঘুমান। 

বিশেষজ্ঞদের বলা এই নিয়মগুলি মেনে চললে রোখা যাবে অকাল বার্ধক্য। সেই সঙ্গে, ইতিমধ্যেই বয়স্ক এমন মানুষেরা এই নিয়ম মেনে চলতে পারলে ৫০ থেকে ৬০ এর গোড়ায় এসেও অনুভূতি হবে ৪০ এর মতো। আবারও ফিরে পাওয়া যাবে যৌবনকে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন