Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৩

‌আত্মহত্যার ৬ মাস পরে যুগলের বিয়ে দিল দুই পরিবার

Two-families-married-the-couple

সমকালীন প্রতিবেদন : আশ্চর্য থেকে আশ্চর্যতম ‌ঘটনা বললে ভুল হবে না। যতক্ষণ প্রাণ ছিল, তখন দুই পরিবার ছিল বিরূপ। কিন্তু একটা মৃত্যুর ঘটনা দুই পরিবারকে কাছাকাছি নিয়ে আসে। বিবাদ মিটে গিয়ে তৈরি হয় নতুন সম্পর্ক। তারজন্য অবশ্য বলি দিতে হয়েছে দুটি তাজা প্রাণকে।

ঘটনা হলো, ছয় মাস আগে মৃত্যু হয়েছিল এক প্রেমিক যুগলের। তাঁদের আবক্ষ মূর্তি বানিয়ে সেই মূর্তিকে বিয়ে দেওয়া হল ঘটা করে। অভিনব এই বিবাহ অনুষ্ঠানে কনে এবং বরপক্ষের পরিবারের লোকেরা হাজির ছিলেন। প্রশ্ন হল, আজব বিয়ের কারণ কী?  

গুজরাটের তাপি এলাকার বাসিন্দা এই তরুণ তরুণী গণেশ এবং রঞ্জনা। উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক সময় তাঁরা সংসার বাঁধতে আগ্রহী হন। ভেবেছিলেন, বাকি জীবন একসঙ্গে থাকার শপথ নেবেন অগ্নি সাক্ষী রেখে, দুই পরিবারের সম্মতি নিয়ে। ফলে উভয়ে নিজেদের পারিবারের সদস্যদের কাছে সম্পর্কের কথা জানান এবং বিয়ের প্রস্তাব করেন। 

কিন্তু দুই পরিবারই এতে আপত্তি তোলে। মূল আপত্তি আসে ছেলের বাড়ির তরফে। যেহেতু উভয় পরিবার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তারপরের ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। ভালোবাসা মাথা নোয়াতে জানে না। ওই তরুণ–তরুণী পরিবারের এই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি। 

তাঁরা ভালাবাসার স্বীকৃতি চেয়েছিলেন। পরিবার তথা সমাজ তা দিতে রাজি না হওয়ায় চরম সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন দুজনে। এর পরেই আশ্চর্য পরিবর্তন ঘটে উভয় পরিবারের মনোভাবে। গণেশ এবং রঞ্জনার পরিবারের লোকেরা একজোট হন। 

একসঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়ে সন্তানদের জন্য হাহাকার করেন। আর সেখানেই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। দুই পরিবারের উদ্যোগে গনেশ এবং রঞ্জনার অবক্ষ মূর্তি তৈরি হয়। যুগলের আত্মহত্যার ছয় মাস পর সেই মূর্তিকে বিয়ে দেওয়া হল যাবতীয় নিয়ম মেনে।

প্রতিবেশীরা বলছেন, এমন ঘটনা বিরল। রঞ্জনার ঠাকুরদা বলেন, 'ছেলের পরিবার আসলে আমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। ফলে ওরা এই বিয়েতে রাজি ছিল না। যদিও আমরা বুঝেছিলাম গনেশ ‌এবং রঞ্জনা একে অপরকে ভালবাসে। সেই কারণে অনভিপ্রেত ঘটনার পর তরুণ–তরুণীর মূর্তি গড়ে বিয়ের পরিকল্পনা করা হয়।'‌ 

উভয় পরিবারের বক্তব্য, যুগলের আত্মা যাতে তৃপ্ত হয়, তার জন্যই জীবিত অবস্থায় তাঁদের যে ইচ্ছে ছিল, তা পূর্ণ করা হল। এখন মৃত্যুর পরে দুই পরিবারের সম্বিৎ ফিরেছে। এটা যদি একটু আগে ফিরতো, তাহলে অকালে দুটো প্রাণ চলে যেত না, এমনই প্রতিক্রিয়া প্রতিবেশীদের।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন