সমকালীন প্রতিবেদন : সোস্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো চ্যানেল খুলে, সেখানে পাখির ছবি দেখিয়ে অবৈধভাবে পাখি বিক্রির ব্যবসা ফেঁদে বসেছিল দুই কারবারী। সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই এক সচেতন ব্যক্তির কাছ থেকে এই অভিযোগ পেয়ে ক্রেতা সেজে দুই অবৈধ পাখি বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করল বনদপ্তর।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হুগলী জেলার হরিপাল থানা এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লা মালিক এবং রফিকুল রহমান নামে দুই ব্যক্তি ইউটিউব চ্যানেল খুলে, সেখানে বিভিন্ন পাখির ছবি দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে।
তাদের কাছ থেকে পাখি কেনার জন্য ওই চ্যানেলে নিজেদের ফোন নম্বরও দিয়ে দেয় ওই দুই যুবক। সোস্যাল মিডিয়ায় এই খবর জানতে পেরে এক সচেতন এবং প্রকৃতিপ্রেমী ব্যক্তি সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা বনদপ্তরের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা বনদপ্তর একটি দল তৈরি করে ওই দুই কারবারীকে ধরার জন্য পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী ক্রেতা সেজে ফোনে যোগাযোগ করা হয় ওই দুই কারবারীর সঙ্গে। তাদেরকে পাখি নিয়ে দক্ষিনেশ্বর এলাকায় আসতে বলা হয়।
সোমবার তারা সেখানে এলে তাদেরকে হাতনাতে পাকড়াও করেন জেলা বনদপ্তরের আধিকারিকেরা। তাদের কাছ থেকে বিদেশী প্রজাতির মোট ৩০ টি পাখি উদ্ধার হয়।
উদ্ধার হওয়া এই পাখিগুলির মধ্যে ৯ টি পাখির বাচ্চা রয়েছে। এই বাচ্চাগুলিকে বড় করার জন্য আপাতত তাদেরকে বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্যে রাখা হবে বলে জেলা বনাধিকারিক জানিয়েছেন।
বনদপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, ধৃত দুই কারবারী গত এক বছর ধরে নিজেদের বাড়িতে বসে সোস্যাল মিডিয়াকে ববহার করে এই অবৈধ কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল। বাড়িতে তারা পাখির বাচ্চাও তৈরির পাকা ব্যবস্থাও রেখেছে। এই কারবারের সঙ্গে আরও বড় চক্র জড়িত বলে সন্দেহ বনদপ্তরের।
যেহেতু ধৃতদের বাড়ি হুগলী জেলায়, তাই ওই জেলার বনদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে তাদের বাড়িতেও হানা দেওয়া হবে বলে বনদপ্তরের আধিকারিক জানিয়েছেন। ধৃতদের কাছ থেকে আরও তথ্য জানতে তাদেরকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে তোলা হবে।
বনপ্রাণ আইনে পাখি ধরা এবং বিক্রি করা যেখানে নিষিদ্ধ, সেখানে এভাবে সোস্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে পাখি বিক্রির কারবার চালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় হতবাক্ বনদপ্তরের আধিকারিকেরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন