সমকালীন প্রতিবেদন : একটি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ পয়সা থেকে ৭৫ পয়সায়। সিম বিক্রি হচ্ছে কিলোপ্রতি দেড় টাকা। আর বিদেশী কুল বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কিলোয়। শুনতে অবাক লাগলেও পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লক এলাকার কৃষকেরা তাঁদের ফসল বিক্রি করতে এসে এমনই দাম পাচ্ছেন।
সবজি চাষে যথেষ্ট নাম রয়েছে এই এলাকার। প্রতি বছর সবজি চাষ করে বেশ লাভের মুখ দেখেন এখানকার কৃষকেরা। আর তাই এবছরও জমি লিজ নিয়ে, সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে এই এলাকার কৃষকেরা কেউ কপি, কেউ সিম, আবার কেউ বিদেশী কুল চাষ করেছেন।
ফসলও হয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে কিছু ক্ষেত্রে সবজির গায়ে দাগ লেগে গেছে। আর সেই ফসল বিক্রি করতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা কৃষকদের। জমি থেকে ফসল তুলে পাইকারি বাজারে নিয়ে গিয়ে যেখরচ হচ্ছে, সেই পয়সাটুকুও উঠছে না তাঁদের।
এখানকার কৃষকেরা জানালেন, একটি ফুলকপির চারা কিনতে হয়েছে ১ টাকা ২৫ পয়সা করে। এরপর সার, জল দিয়ে সেই ফসল ফলাতে হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে জমির লিজের টাকা, ব্যাঙ্ক ঋণ ও তার সুদের টাকা। এরপর ফসল তুলে জমি থেকে বাজারে নিয়ে যাওয়ার খরচ।
এতোকিছুর পর একটি প্রমান সাইজের ফুলকপি বা বাঁধাকপি যদি ১ টাকারও কমে বিক্রি হয়, তাহলে কোথায় যাবেন এই কৃষকেরা। ফলে জমি থেকে ফসল তোলার টাকাটাও না ওঠায় অনেক কৃষক ফসল জমিতেই রেখে দিচ্ছেন। অনেকে তাঁদের ফসল গরু, ছাগলকে খাইয়ে দিচ্ছেন।
ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো একই অবস্থা সিম, কুলেরও। পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে কৃষকেরা সিমের যা দাম পাচ্ছেন, তাতে তোলার খরচও উঠছে না। কুলের দাম পাচ্ছেন কিলোপ্রতি মাত্র ১০ টাকা।
কৃষকদের আক্ষেপ, ফসল চাষ করে তার মূল্য তাঁরা সামান্য পেলেও পাইকাররা সেই ফসল খুচরো বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি করছে। ফলে কৃষকেরা পরিশ্রম করেও নূনতম পয়সাটুকুও পাচ্ছেন না। বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন তাঁরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন