সম্পদ দে : বিশ্বের প্রতিটি মানুষের একটি ইচ্ছা থাকেই। আর সেটি হল, তারা যেন জীবনে অন্তত একবার গিনেস বুকে নিজের নাম তুলতে পারেন। কিন্তু কি এই 'গিনেস বুক'? গিনেস বুক হলো, এমন একটি কালেকশন যেখানে বিশ্বের সমস্তরকমের অসাধারণ থেকে উদ্ভটতম রেকর্ড সংরক্ষণ করা থাকে। সেই জন্যই এর নাম 'গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড'।
গোটা বিশ্বে প্রথমবার কোনও একটি কাজ করে একজন ব্যক্তি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়ে তোলেন। অন্য একজন ব্যক্তি সেই রেকর্ডকেই চ্যালেঞ্জ করে আগের রেকর্ডটিকে ভেঙে নিজের নাম গিনেস বুকে নথিভুক্ত করান। কিন্তু ফিলিপাইন্সের রিয়ান অ্যালোনজোর এটি প্রথমবার নয়। দ্বিতীয়বার গিনেস বুকে নিজের নাম তুলে ফেললেন রিয়ান।
একটানা ৩ হাজার ৭৩১ বার দড়ি লাফ দিয়ে নিজের নাম রেকর্ডে তুলেছেন রিয়ান। কিন্তু এটিই প্রথমবার নয়। এর আগে ২০২১ সালে প্রথমবার নিজের নামে এই রেকর্ড নথিভুক্ত করান তিনি। দুবারই তিনি রেকর্ড করেন দড়ি লাফিয়ে।
২০২১ সালে প্রথমবার ১২ ঘন্টা ধরে লাফিয়ে তিনি রেকর্ড গড়েন। সেখানে রিয়ান একবার লাফিয়ে দড়িটিকে নিজের পায়ের নিচে দিয়ে দুবার নিয়ে যান। এইভাবে ১২ ঘণ্টায় মোট ৪০ হাজার ৯৮০ বার লাফিয়ে রেকর্ড করেন তিনি।
আর এবার দড়ি লাফানোর সময় নিজের হাতকে বারবার ক্রস করে একটানা ৩ হাজার ৭৩১ বার লাফিয়ে দ্বিতীয় রেকর্ডটিকেও নিজের নামে করে নিলেন রিয়ান। এর আগে একটানা ২ হাজার ৪০৫ বার দড়ি লাফানোর রেকর্ড ছিল বিশ্বে, যা কিনা অনায়াসেই ভেঙে ফেললেন ফিলিপাইন্সের এই ৩৫ বছর বয়সী অ্যাথলিট যুবক।
রিয়ান অ্যালোনজোর একটি সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি নিজের অনুশীলন করাকালীন মাঝেমাঝেই নিজের রেকর্ড নিজে ভেঙেছেন। এখন থেকে নয়, ছোটবেলা থেকেই দড়ি লাফানো বা স্কিপিং করা তাঁর পছন্দ। অন্য কোনওরকম স্পোর্টস নয়, স্কিপিংই ছিল তাঁর শরীরচর্চার একমাত্র পদ্ধতি।
রিয়ানের এই দ্বিতীয়বার ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করার পর রীতিমত অবাক গোটা বিশ্ববাসী। কারণ, ১২ ঘণ্টায় ৪০ হাজার ৯৮০ বার হোক বা কঠিন প্রক্রিয়ায় ৩ হাজার ৭৩১ বার লাফানো। দুটিই অত্যন্ত কষ্টকর প্রক্রিয়া।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এর পক্ষ থেকে টুইট করে জানানো হয় যে, দ্বিতীয়বারের মতো পৃথিবীর সবথেকে বেশি দড়ি লাফের খেতাব জিতে নিয়েছেন ফিলিপিনস এর রিয়ান অ্যালোনজো। আর এই টুইটের পর এই মুহূর্তে চারিদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথা শুনলে তারা বলছেন, শরীরে অতিরিক্ত ওজন হলে বা কেউ খুব লম্বা হলে, স্কিপিং করলে খুব একটা সাফল্য পাওয়া যায় না। কিন্তু যাদের ওজন বেশ কম, তাদের ক্ষেত্রে স্কিপিং খুবই লাভজনক ও আদর্শ।
দ্বিতীয়বারের মতো গিনেস বুকে নিজের নামে আরও একটি রেকর্ড করতে পারার সাফল্যে রিয়ান এতটাই উৎসাহী যে, তিনি বেশ বড় করে একটি স্কিপিং প্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবছেন। ইতিমধ্যে একটি ছোট প্রতিষ্ঠান তাঁর থাকলেও তা যথেষ্ট নয়।
তাই যাতে তিনি আরও মানুষকে স্কিপিং এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে পারেন এবং তাদেরকে ট্রেনিং দিতে পারেন, সেইজন্য গিনেস বুক থেকে পাওয়া অর্থরাশি দিয়ে এই ছোট প্রতিষ্ঠানটিকে আরও বড় বানাতে চান ফিলিপাইন্স এর অ্যাথলিট রিয়ান অ্যালোনজো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন