Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২

Tour : আরব সাগরে ঘন্টা দুয়েক

আরব সাগরে ঘন্টা দুয়েক

সুনীল কুমার রায়

       

KTDC র লঞ্চে আরব সাগরে ভাসবো, উপভোগ করবো, অথচ কোচি শহরকে চিনব না, তা হয় নাকি! আরব সাগরের রাণী বলা হয় কোচিকে। হিন্দু, মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান, পর্তুগিজ সহ একাধিক ভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, ভাষাভাষীদের সহাবস্থানে এক আদর্শ পোর বন্দর এই কোচি। এর পূর্বতন নাম কোচিন। বর্তমানে কোচি। 

১৫০০ খ্রিষ্টাব্দে Alvarez Cabral প্রথম পর্তুগিজ ভ্রমনার্থী আবার ব্যবসায়ীও বটে এখানে পা রাখেন। ১৫০২ খ্রিস্টাব্দে আসেন ভাস্কো-দা-গামা। আরব সাগর ও ব্যাক‌ওয়াটারের মাঝামাঝি স্থানে দশটি দ্বীপের সমষ্টিতে এই কোচি শহর।

মূলত সমগ্র কোচি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রতিনিয়ত সমুদ্রের গভীরতা ১১ থেকে ১৫ মিটার গভীর রাখতে খনন কাজ চলছে। একটি দ্বীপের নাম ইউ উইলিঙ্কটন দ্বীপ। এখানে ইন্ডিয়ান নেভির দক্ষিণ ভারতের প্রধান কার্যালয়, বিমান বন্দর, রেল যোগাযোগ, পর্যটন দপ্তর। 

এটি ১৯২০ সালে ব্রিটিশ রাজ উইলিংটন তার মস্তিষ্কপ্রসূত স্থাপত্য শিল্পে গড়েছিলেন। অপর প্রান্তের দ্বীপ মুম্বাইয়ের পরে দ্বিতীয় বাণিজ্যিক শহর এর্ণাকুলাম। সারা ভারতের সঙ্গে রেল ও সড়ক পথে যোগাযোগ। আরব সাগরের উত্তরে পর্তুগিজদের হাত ধরে ব্যাপীন দ্বীপ। 

এখানে প্রচুর নারকেল গাছ, রমনীয় সান বাথ, সুইমিং পুল, ডলফিন, কারুকার্যমন্ডিত সেতু। সব মিলিয়ে এক স্বর্গীয় পরিবেশ। আমরা সতেরো জন KTDC অধীনে Neo classic and tour pvt ltd এর ব্যবস্থাপনায় ঘন্টা দুয়েকের জন্য classic lmperial musical boating এ উঠলাম সাত হাজার টাকার চুক্তিতে। 

সুসজ্জিত বোট। আকারে বিরাট আকর্ষণীয়, ভালো অর্থের বিনিময়ে যে কোনও খামারের উপযুক্ত ব্যবস্থা আছে। মেরিন ড্রাইভ থেকে বিকাল পৌনে পাঁচটায় র‌ওনা হলাম, গভীর প্রত্যয়ে। এগিয়ে চলেছি। পাশে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী জলযান শান্ত আরবের উপর দিয়ে এগিয়ে চলেছে।

এক নতুন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। অতিক্রম করলাম আব্দুল কালাম উদ্যান, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নামাঙ্কিত এক অসাধারণ পার্ক। দুজন তামিলভাষী কষ্টকর ইংরেজি ভাষায় বর্ণনা দিচ্ছিলেন। একে একে হারিয়ে গেল ইন্ডিয়ান কোস্টগার্ডের সদর দপ্তর, ফোর্ট, একাধিক দ্বীপ, এর্ণাকুলাম শহর, ভারতীয় নৌবাহিনীর সংরক্ষিত স্থান, যুদ্ধ জাহাজ আই এস বিন্দা, তেল সরবরাহের পথ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পাইপ লাইন।

আরব সাগরের ধীর নীল জলে সূর্যিমামা লুটিয়ে পড়ছে, অস্ত যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এক অসাধারণ পরিবেশ। মনে রাখার মতো। সন্ধ্যা গভীর হলে সাগরের তীরে আলোর মেলা, বিনোদনের রোমাঞ্চিত আলোর হাতছানি। 

পেরিয়ার ও রাডমান্না রাও নদী নৃত্য করতে করতে সাগরে একাকার হয়ে গেছে। নামে মিউজিক্যাল বোটিং, গান হবে না, বাজনা হবে না হয় কখনো? শুরু হলো গান বাজনা। সঞ্জয়, মনোজ, নিরাপদ, আমি শরীর দুলিয়ে পা মেলালাম। হঠাৎ সুজাতা হাত মিলিয়েছে। 

নিতাইদাকে ঝুনু, রাধা, সুচন্দা, চিত্রা, কল্পনা, নরেশ হাততালি দিয়ে উৎসাহিত করছে। কোমর দুলিয়ে নির্মল ফটো তুলছে। ক্লান্তি আসে শরীরে। অসিতের হাত ধরে পাড়ে এলাম। স্মৃতি হয়ে থাকবে আরব সাগরে ঘন্টা দুয়েক কাটানোর মুহূর্ত।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন