সম্পদ দে : সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি নির্জন দ্বীপে অবস্থিত ছোট্ট সাদা এক বাড়িকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিভিন্ন জল্পনা। ছড়াচ্ছে অনেক রকমের রহস্যময় তত্ত্ব। বাড়িটিকে দেওয়া হয়েছে বিশ্বের সবথেকে নির্জন ও নিঃসঙ্গ বাড়ির নাম।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে আজকাল অত্যন্ত ভাইরাল এই বাড়িটি। এই নিঃসঙ্গ বাড়ির যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, অত্যন্ত সুন্দর নির্জন একটি দ্বীপের একদিকে সবুজ পাহাড়ের ধার ও অন্যদিকে নীল সমুদ্রে ঘেরা। তারই মাঝে একটি কাঠের সাদা বাড়ি।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাড়িটি আইসল্যান্ডের দক্ষিনে এলিডে নামক একটি দ্বীপে অবস্থিত। দ্বীপটি আসলে ওয়েস্ট ম্যান দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ১৫ থেকে ১৬ টি দ্বীপমালার মধ্যে একটি। গোটা একটি দ্বীপে মাত্র একটা বাড়ির ছবি, তাও কিনা আবার নির্জন। এই দেখেই সন্দেহ জাগে নেটিজেনদের মনে। বর্তমানে দ্বীপটি জনশূন্য হলেও একসময় এটি প্রায় পাঁচটি পরিবারের বাসস্থান ছিল।
সর্বশেষ পরিবারটি ১৯৩০ সালে এই দ্বীপ ছেড়ে চলে যায়। তারপর থেকেই এভাবে জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে আছে এই দ্বীপ এবং সেখানকার সাদা বাড়িটি। মানুষের মনে জিজ্ঞাসা থাকে সর্বক্ষণ। আর সেই জিজ্ঞাসা থেকেই তৈরি হয়েছে বিভিন্ন প্রশ্ন ও গুজব।
বহু বছর ধরে এই সাদা বাড়িটিকে ঘিরে তৈরি কিছু বিখ্যাত গুজব আছে, যার মধ্যে কয়েকটি হল– এই বাড়িটি হয়তো কোনও ধনকুবের দ্বারা তৈরি, যাতে ভবিষ্যতে যদি পৃথিবীতে কোনও মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সে এখানে আশ্রয় নিতে পারবে। অথবা, হয়তো এই বাড়িটিতে কোনও ধর্মীয় গুরু থাকতেন। যিনি কিনা বিভিন্ন ধর্মীয় আচার পালন করার জন্য এই বাড়িটিকে বানিয়েছিলেন।
আবার কারও কারও মুখে এও শোনা যায় যে, এই বাড়িটির আসল মালিক হয়তো আইসল্যান্ডের বিখ্যাত গায়ক রিয়র্ক। এমনকি কেউ কেউ তো সোশ্যাল মিডিয়ায় এটিও দাবি করেন যে, বাস্তবে কোনও বাড়ির অস্তিত্বই নেই এই দ্বীপটিতে। ছবিটা আসলে ফটোগ্রাফার দ্বারা এডিট করা।
প্রতিটি গুজবই অত্যন্ত বিশ্বাসজনক লাগলেও দুঃখের বিষয়, এর একটিও আসল নয়। বাস্তবেই সাদা কাঠের বাড়িটি 'এলিডে হান্টিং অ্যাসোসিয়েশন' দ্বারা নির্মিত একটি লজ। এই দ্বীপের শেষ বসবাসকারীরা দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর জানতে পারা যায় যে, এই দ্বীপ এবং তার আশেপাশে প্রচুর পরিমাণে মাছ ও পাফিন পাখি পাওয়া যায়।
যাতে এইখানে সহজে যাতায়াত করা যায় ও থাকা যায়। সেই জন্যই এই অ্যাসোসিয়েশন বাড়িটিকে একটি 'বেস' হিসেবে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করেছে, যাতে তারা সহজেই পাফিন শিকার করতে পারে।
শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন গুজবগুলির একটিও যে আসলে সত্যি নয়, তার প্রমান মেলে। তবে এমন নির্জন এবং নিশ্চুপ একটি দ্বীপে একা শান্তিতে একটি ছুটি কাটাতে চাওয়া মানুষের জন্য মন্দ হবে না, কি বলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন