সম্পদ দে : আজকের এই প্রতিবেদনটি আর পাঁচটি প্রতিবেদনের থেকে একটু আলাদা। যাকে বলা যায় একেবারে অফবিট নিউজ। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মাঝেমধ্যেই এমন কিছু ঘটনা ঘটতে থাকে, যা কিনা অন্য মাত্রার সংবাদ হিসেবে ধরা দেয়। নিত্যদিনের সাধারন খবরগুলির থেকে একটু আলাদা। এই যেমন আমেরিকার ফ্লোরিডার এই ঘটনাটি।
খবরটি একটি ডাকাতির। কিন্তু এই ডাকাতের কান্ড শোনার পর পুলিশ নিজেই হতবাক। কারণ, ৪৫ বছর বয়সী ডাকাত নিকোলাস ল্যামাডরিডের ডাকাতি করার কারণ হলো, সে বাড়িতে বসে বসে বোর হচ্ছিল। সময় কাটানোর জন্য কিছু করার ছিল না। তাই সে একটু ডাকাতি করতে বেরিয়েছিলেন।
খবরটি শুনে বিশ্বাস না হলেও এমনটিই ঘটেছে আমেরিকার ফ্লোরিডায়। সূত্রের খবর, এভাবে অন্তত দুটি ডাকাতি করেছে সে। যার মধ্যে প্রথম ডাকাতি করেছে গত ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ। তাও আবার একটি ব্যাংকে। দ্বিতীয়টি ঠিক দুদিন পর একটি পেট্রোল পাম্পে।
ডাকাতি করার সময় নাকি পুলিশের টুপি পড়েছিল ওই যুবক। ব্যাঙ্কে কর্মীদের অভিযোগ, রাত প্রায় সাড়ে নটা নাগাদ ওই যুবক ব্যাঙ্কে ঢুকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নগদ সমস্ত অর্থ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনার ঠিক দুদিন বাদে একটি পেট্রোল পাম্পেও একইরকম কায়দায় লুটপাট করে সে।
যদিও এক্ষেত্রে বন্দুকের প্রয়োজন পড়েনি নিকোলাসের। সে তার হাতটিকে নিজের পকেটে এমন ভঙ্গিমায় রেখেছিল যে, তা দেখে পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা ভেবে বসেছিলেন, পকেটে বোধহয় বন্দুক রাখা আছে। তাই কেউ আর কোনও বাধা দেননি বা প্রতিবাদ করেন নি।
ডাকাতি হয়ে যাওয়ার পর কর্মচারীরা দ্রুত পুলিশকে ফোন করলে পুলিশ এসে দেখে, অভিযুক্ত নিকোলাস পালিয়ে না গিয়ে বরং পাম্পের সামনে দাঁড়িয়েই মাথায় একটি পুলিশের টুপি পড়ে দিব্যি সিগারেট খাচ্ছে। এরপর নিকোলাসকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুলিশ জানতে পারে, শুধুমাত্র পেট্রোল পাম্প নয়, দুদিন আগের ব্যাঙ্ক ডাকাতির পেছনে তারই হাত আছে।
পুলিশি তদন্তে নিকোলাসকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, মাত্র দুদিনের ব্যবধানে দুদুটি ডাকাতি করার কারণ কি ? তখন সে ভয় তো একেবারেই পায় না, বরং হাসতে হাসতে পুলিশকে জানায়, বাড়িতে বসে তার কোনও কাজ ছিল না. তাই কেবলই সময় কাটানোর জন্য ব্যাঙ্ক ডাকাতি করতে বেরিয়েছিল সে।
তবে ব্যাঙ্ক ডাকাতি করার পরেও যখন তার বাড়িতে বসে বোর লাগছিল, তখন সে পেট্রোল পাম্পেও একটি ডাকাতি করার প্ল্যান বানায় এবং যেমন ভাবনা তেমন কাজ। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে সে করে ফেলে দুটি ডাকাতি। পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল, টাকা পয়সার সমস্যা এবং সংসারে অনটনের কারণেই হয়তো নিকোলাসের এই পদক্ষেপ। তবে নিকোলাস সম্পর্কে এবং তার পরিবার সম্পর্কে খোঁজ করে পুলিশ তো রীতিমতো অবাক।
পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পারেন, নিকোলাসকে যেমন তেমন ঘরের সন্তান ভাবা যাবেনা একদমই। রীতিমতো বেশ সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান এই নিকোলাস। টাকা পয়সার অভাব নেই মোটেও। তবে এই মুহূর্তে হাতে কাজ নেই তেমন। প্রথমে তার কথা পুলিশ বিশ্বাস না করলেও রেকর্ড ঘেটে দেখা যায়, সত্যিই এর আগে কোনওরকম ক্রাইম রেকর্ড নেই নিকোলাসের নামে।
লোকে বোর হলে সচরাচর কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান বানায় বা সিনেমা দেখে। কেউ কেউ আবার গান গাইতে বা রান্না করতে ভালোবাসে। কিন্তু কারোর মাথায় যে সময় কাটানোর জন্য ডাকাতি করার বুদ্ধি আসতে পারে, তা ভেবেই অবাক হচ্ছেন ফ্লোরিডার পুলিশ তথা শহরবাসী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন