Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২

পেঁপের গুণ অনেক, প্রতিদিন অল্প করে পেঁপে খান

 

Eat-papaya-sparingly

সম্পদ দে : ‌এমন অল্প কিছু সব্জি পাওয়া যাবে, যা কিনা সব্জি এবং ফল– দুই প্রকারেই ব্যবহৃর হয়। এই তালিকায় যেমন রয়েছে পেঁপে। পেঁপে হলো এমন এক সব্জি, যা কিনা কাঁচা অবস্থায় সব্জি, তবে পেকে গেলে তা ফল হিসেবে খাওয়া হয়। তবে দুটি রূপই শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। 

সব্জি হিসেবে খান বা ফল হিসেবে, দুই ক্ষেত্রেই পেঁপে হলো সুস্বাস্থ্যের ভান্ডার। তবে পেঁপের শুধু উপকারী দিকই নয়, কিছু অপকারী দিকও আছে। সেক্ষেত্রে কিছু বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হবে। আসুন তবে আজকের এই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক পেঁপের সম্পর্কে কিছু উপকারিতা ও সাবধানতা।

শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য হোক বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে, পেঁপের জুরি মেলা ভার। তবে পেঁপে সম্পর্কেও মেনে চলতে হবে কিছু সাবধানতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ চাইলে কাঁচা পেঁপেও খেতে পারেন, কিন্তু খুব সামান্য পরিমাণেই। এর থেকে বেশি খেতে চাইলে খেতে হবে সেদ্ধ বা রান্না করেই। 

আয়ুর্বেদ অনুসারে গর্ভবতী মহিলাদের পেঁপে না খাওয়াই উচিত। পাকা পেঁপের বীজ সবসময় ফেলে দেওয়া উচিত। পাকা পেঁপের বীজ একপ্রকার বিষাক্ত। তাই ভুল করেও খাওয়া যাবে না তা। এমনকি পেঁপে কাঁচা অবস্থায় খেলে দেখা দিতে পারে অ্যালার্জির সম্ভাবনাও।

তবে এত সাবধানতা দেখে ভয় পাবেন না। এইরকম কিছু বিধি-নিষেধ মেনে চললেই কেল্লাফতে। বাকি থাকছে শুধুই উপকারিতা। তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক পেঁপের অগুন্তি কিছু উপকারিতার মধ্যে থেকে কয়েকটি। 

যার মধ্যে প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার যে, প্রতি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে থাকে ৩৯ ক্যালরি। এছাড়াও থাকে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, আঁশ ও অনেক রকম ভিটামিন, যেমন ভিটামিন এ, বি, সি, ডি। সেইসঙ্গে ফসফরাস, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম ও অ্যালবুমিন এনজাইম এর মতো একাধিক উপাদান।

কয়েকশো বছর ধরেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্র ও বাড়ির বড়রা বলে আসছেন, শরীরের অনেক রোগ সারাতেই পেঁপে কার্যকর। লিভার ও ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখতে ও অন্ত্রের ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে পেঁপে সাহায্য করে। সেই জন্য হজমের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত উপকার পাওয়া যায় এই ফল থেকে।

গ্যাস্ট্রিকের জন্য বুক, পেট জ্বালায় ভুগলে ও পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড ও ফ্যাট দূর করতে পেঁপে খুবই কার্যকরী। এমনকি সঠিক পরিমাণ পেঁপে খেলে শরীর সতেজও থাকে এবং চনমনেও লাগে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বেড়ে ওঠা শিশুদের জন্য পেঁপে খুবই আদর্শ একটি খাবার। তবে পরিমাণের প্রতি খেয়াল রেখেই খাওয়াতে হবে। কাঁচা পেঁপে হলে সেদ্ধ করেই যেন খাওয়ানো হয়, সেই দিকে নজর রাখতে হবে।

জাপানের কয়েকজন বিজ্ঞানীর করা একটি গবেষণায় পেঁপে সম্পর্কে জানানো বিভিন্ন উপকারিতার মধ্যে কয়েকটি হলো—

১| কাঁচা পেঁপে হোক বা পাকা। দুটোই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে।

২| পেঁপেতে থাকা কার্বোহাইড্রেট ও আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ও হজমের সমস্যাকে ঠিক করতে সাহায্য করে।

৩| পেঁপেতে উপস্থিত থাকা প্রচুর পরিমাণে কাইমোপ্যাপিন, আর্থারাইটিস প্রতিরোধ করে।

৪| অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ এবং জিক্সানথিন এর মতো উপাদানগুলি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

৫| যাদের শরীরে ও গিঁটে যন্ত্রনা থাকে, তাদের ক্ষেত্রে পেঁপে খুবই উপকারী। পেঁপেতে থাকা প্যাপিন, যা শরীরে বিভিন্ন ব্যথা–যন্ত্রণা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

পেঁপের এতোরকম উপকারিতা দেখার পর, আলাদা করে নিজেদের রোজকার খাদ্য তালিকায় পেঁপেকে রাখার কথা বলতে হয় না। তবে পেঁপে খাওয়ার আগে একবারও বিধি-নিষেধগুলো সম্পর্কে ভুললে চলবে না। তবে আর দেরি কিসের? এখন থেকেই প্রতিদিন সকালের ব্রেকফাস্টে এবং দুপুরের খাদ্য তালিকায় যুক্ত হোক ফল হিসেবে পাকা পেঁপে ও সব্জি রূপে কাঁচা পেঁপে।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন