সমকালীন প্রতিবেদন : বছর ৬৫ বয়সের তাহেরা বিবির চোখে ছানি পরেছে। ঠিকভাবে দেখতে পারেন না। ডাক্তার বলেছেন, ছানি অপারেশন করতে হবে। কিন্তু সেই খরচ বহন করার ক্ষমতা নেই তাঁর পরিবারের। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও এখনো পান নি তিনি।
এই অবস্থায় চোখের ছানি অপারেশন করা আর হয়ে উঠছে না। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের সদস্যা তাহেরা বিবি নিজের ৭ মেয়ের বিয়ে দিয়ে এখন আরও নি:স্ব হয়ে পরেছেন। বয়স ৬০ পেরিয়ে গেলেও এখনো মিলছে না বার্ধক্য ভাতার সুযোগ।
শুধু তাই নয়, দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী এই পরিবারের নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকাতেও নেই। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেতে নানাজনের কাছে আবেদন করেও সুফল মেলে নি কোনও কিছুরই। ফলে, আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই তাঁর।
আসলে তাহেরা বিবি একটি উদাহরণ মাত্র। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের খাঁজুরডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন গ্রামের মসজিদপাড়ায় প্রায় ২০০ পরিবারের বসবাস। এই পরিবারগুলির কেউ ভ্যানরিক্সা চালিয়ে, কেউ দিন মজুরির কাজ করে সংসার চালান।
সংসার চালাতে অনেকে ভিন রাজ্যেও পাড়ি দিয়েছেন। অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। অধিকাংশেরই খড় কিম্বা টালির চালের এক কামরার একটি করে ঘর। দিন গুজরান করাই যেখানে প্রতিদিনের লড়াই, সেখানে পাকা ঘর তৈরি করা তাদের কাছে স্বপ্ন।
পরিস্থিতি যেখানে এমন, সেখানে এই গ্রামের একটি পরিবারও সরকারি বাড়ি পান নি। না পাওয়ার তালিকায় আরও অনেক কিছুই আছে। ফলে রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মীদের উপর তাদের ক্ষোভ রয়েছে যথেষ্ট।
ভোট যায়, ভোট আসে। কিন্তু পরিস্থিতির বদল ঘটে না নতুন গ্রামের মসজিদপাড়ার বাসিন্দাদের। তাঁরা জানেন না, আদৌ কোনওদিন তাদের পাকা বাড়িতে থাকার স্বপ্ন পূরণ হবে কি না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন