সমকালীন প্রতিবেদন : ভাড়াবাড়ির ঘরের ভেতর থেকে রক্তাক্ত মৃতদেহ মিললো এক নার্সিং পড়ুয়া ছাত্রের। তাঁর গলার নলি কেটে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত ছাত্র উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নার্সিং ট্রেনিং কলেজের প্রথমবর্ষের পড়ুয়া।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত ছাত্রের নাম উদ্ভব সরকার (২১)। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে। তাঁর মতো ওই এলাকার ৪ জন যুবক অশোকনগরের সরকারি নার্সিং ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কলেজের কাছে বিনিময়পাড়া এলাকায় তারা ৪ জন একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতো।
১ নভেম্বর থেকেই তাদের ক্লাস শুরু হয়। ৪ ছাত্রের মধ্যে ক্লাস শুরুর পরপরই একজন ছাত্র ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। বাকি তিনজনের মধ্যে গতকাল একজন বাড়ি চলে যায়। ভাড়া বাড়িতে তখন উদ্ভব এবং বিক্রম সরকার নামে আর এক ছাত্র ছিল।
বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, রাত ১০ টা পর্যন্ত তাদের কথা শোনা গেছে। ওই ছাত্রদের মধ্যে আগে কখনও গোলমালের ঘটনা ঘটে নি। রবিবার সকালে ঘরে তালা দিয়ে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বিক্রম। দুপুর হয়ে গেলেও উদ্ভবের খোঁজ না পাওয়া যাওয়ায় মনে খটকা লাগে বাড়ির মালিকের।
এরপর এদিন দুপুরে বাড়িওয়ালা ওই ছাত্রদের ঘরের সামনে গিয়ে দেখেন ঘরের তালা বন্ধ। জানালা দিয়ে ঘরের ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখেন যে, খাটের নিচে এক ছাত্র পা ভাজ করা অবস্থায় শুয়ে রয়েছে। কিন্তু সে কে, তা বোঝা যাচ্ছে না।
অনেক ডাকাডাকি করেও ঘর থেকে কারও আওয়াজ না মেলায় সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। এরপর অশোকনগর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজার তালা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখে, খাটের নিচে গলার নলি কাটা অবস্থায় উদ্ভবের রক্তাক্ত দেহ পরে রয়েছে।
এরপর পুলিশ দেহ উদ্ধার করে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, তাঁর ফ্রিজের ভেতরে থাকা সবজি টাকার বেশ কয়েকটি ছুরির মধ্যে একটি ধারালো ছুরি পাওয়া যাচ্ছে না। মনে করা হচ্ছে, এখান থেকে ছুরি চুরি করে নিয়ে গিয়ে উদ্ভবকে খুন করা হয়েছে।
তবে এই খুনের ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, কি কারণে এই খুন– তা এখনও পরিষ্কার নয়। ওই ছাত্রের সহপাঠী বিক্রমের গতিবিধি সন্দেহজনক বলে মনে করছে পুলিশ। তার মোবাইল ফোনের সুইচড অফ রয়েছে। তার সন্ধান পেলে এই খুনের কিনারা অনেক সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।
এদিকে, খুনের ঘটনার খবর পেয়ে এদিন বিকেলে এলাকায় যান অশোকনগরে বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। এই বিষয় নিয়ে এদিন তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় মানুষের কোনও যোগ নেই বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে। পুলিশ মৃত ছাত্রের দুই সহপাঠীর খোঁজ চালাচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন