সমকালীন প্রতিবেদন : জীবিত মহিলাকে মৃত হিসেবে দেখিয়ে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট বের করে কয়েক বিঘা জমি নিজের নামে করে নিল মহিলার ভাই। এই ঘটনা জানতে পেরে প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরে বেরাচ্ছেন প্রতারিত মহিলা।
কোনওরকম খোঁজ না নিয়ে কিভাবে পঞ্চায়েত থেকে মিথ্যা ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দেওয়া হল, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে। যদিও এব্যাপারে নিজের দায় ঝেড়ে ফেলেছেন পঞ্চায়েত প্রধান।
জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার সোহাই–শ্বেতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ফিরোজা বিবি ২০০৫ সালের ২০ মার্চ মারা গেছেন বলে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের কাছ থেকে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই ওয়ারিশন সার্টিফিকেট বের করে নেয় ফিরোজার ভাই গোলাম মোস্তফা মন্ডল।
অথচ ফিরোজা বিবি এখনও পর্যন্ত জীবিত রয়েছেন। সেই মিথ্যা ওয়ারিশন সার্টিফিকেট দাখিল করে ফিরোজা বিবির প্রাপ্য প্রায় আড়াই বিঘা জমি নিজের নামে করে নেয় তাঁর ভাই গোলাম মোস্তফা। গোটা কাজ শেষ হওয়ার বেশ কিছুদিন পর বিষয়টি জানতে পারেন ফিরোজা বিবি।
এরপর তিনি ন্যায্য বিচারের আশায় পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, বিএলআরও, পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও সুরাহা পাচ্ছেন না বলে তাঁর দাবি। ফিরোজা বিবির অনুমান, টাকা খাইয়ে এই মিথ্যা সার্টিফিকেট বের করে তাঁর ভাই তাঁর প্রাপ্য জমি নিজের নামে করে নিয়েছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত গোলাম মোস্তাফার অবশ্য বক্তব্য, দিদিকে চাপে রাখার জন্য সে এই মিথ্যাচার করেছে। অন্যদিকে, পঞ্চায়েত প্রধান জলধর মন্ডল সমস্ত দায় চাপিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল রেজ্জাকের উপর।
প্রধানের যুক্তি, এই ধরনের সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রথমে সই করেন। তার ভিত্তিতে তিনি সার্টিফিকেট দেন। ফলে এক্ষেত্রে তাঁর কোনও দোষ নেই।
সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। তিনি আরও জানান, টাকাপয়সার কোনও লেনদেন হয়ে থাকলে তা পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে হতে পারে, এব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
নিজের ন্যায্য পাওনা ফিরে পেতে এখন প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ফিরোজা বিবি। তিনি চান, প্রশাসন তাঁর পাওনা জমি ফিরে পাওয়ার ব্যবস্থা করুক। পাশাপাশি, তার যে ভাই তাঁর সঙ্গে এই মিথ্যাচার করে তাঁর জমি হাতিয়ে নিয়েছে, প্রশাসন তাকে উপযুক্ত শাস্তি দিক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন