সমকালীন প্রতিবেদন : অনাদরে পরে থাকা কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসতবাড়ি অধিগ্রহণের জন্য নতুন করে উদ্যোগী হলেন এলাকার মানুষ এবং বিভূতি অনুরাগীরা। আজ সাহিত্যিকের ৭৩ তম তিরোধান দিবস। এদিন বিভূতি অনুরাগীদের পক্ষ থেকে উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার শ্রীপল্লী গ্রামের বাসভবনে সাহিত্যিকের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।
বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্রের পর বাঙলা সাহিত্যে কালজয়ী আর এক সাহিত্যিকের নাম বিভুতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাহিত্য রচনায় বারেবারেই উঠে এসেছে প্রকৃতি এবং মানুষ। এই কথা সাহিত্যিকের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় কেটেছে এই বাড়িতে।
এই বাড়িতে বসেই তিনি সৃষ্টি করেছেন একের পর এক সাহিত্য রচনা। অথচ সাহিত্য স্রষ্টার স্মৃতি আজ অনাদরে পড়ে রয়েছে। দখল হয়ে যাচ্ছে তাঁর বাসভবন সংলগ্ন জমি। ভ্রমনার্থীরা এই স্থান পরিদর্শনে এসে অনেকটাই হতাশ হন।
স্থানীয় বিভূতি অনুরাগীদের উদ্যোগে বিশেষ দিনগুলিতে সাহিত্যিকের স্মৃতিচারণা হলেও সরকারি উদ্যোগে সেভাবে ধারাবাহিক কোনও কর্মসূচি পালিত হয় না, এমনই অভিযোগ বিভূতি অনুরাগীদের। তাঁরা চান, এই বাড়িটি সরকার অধিগ্রহণ করে সংস্কারের ব্যবস্থা করুক।
১৯৫০ সালের ১ নভেম্বর প্রয়াত হয়েছিলেন সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুযায়ী আজ তাঁর ৭৩ তম তিরোধান দিবস। এদিন তাঁর বাসভবনে হাজির হয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করলেন স্থানীয় বিভুতি অনুরাগীরা। আর সেখানেই তাঁদের গলায় আক্ষেপের সুর শোনা গেল।
নানা গাছগাছালিতে ঘেরা 'স্মৃতির রেখা' নামের এই বসতবাড়িটি সাহিত্যিকের প্রয়াণের পর দীর্ঘদিন ধরে আগলে রেখেছিলেন তাঁর এক আত্মীয়া। তাঁর মৃত্যুর পর আরও বেশি অবহেলিত হয়ে পরে এই বাড়িটি।
একবার সরকারি উদ্যোগে বাড়ির কিছুটা সংস্কার হলেও বিভুতি অনুরাগীরা চান, সম্পূর্ণ অধিগ্রহণ করে বাড়িটির পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ। পর্যটকেরা যেন তাঁর বসতবাড়ি দেখতে এসে নিরাশ না হন।
রাজ্য সরকারের কাছে অনুরাগীদের আবেদন, বহু স্মৃতি, ইতিহাসের সাক্ষী এই বাড়িটিকে সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তোলা হোক। যাতে করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যেতে পারে সাহিত্যিক ও তার অমোঘ সৃষ্টির সব ভান্ডার। বলিষ্ঠ হতে পারে বাংলা সাহিত্য এবং তার ভাবধারা। তবে তার আগে সাহিত্যিকের বর্তমান উত্তরসুরীদের অনুমোদন প্রয়োজন।
স্থানীয় বিভূতি অনুরাগীদের দাবি, এব্যাপারে তাঁরা সাহিত্যিকের বর্তমান উত্তরসুরীদের কাছে লিখিত আবেদন করে জানিয়েছেন যে, পরিবারের পক্ষ থেকে সাহিত্যিকের শ্রীপল্লী গ্রামের বসতবাড়িটি যদি রাজ্য সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়, তাহলে সরকার বাড়িটি অধিগ্রহণ করে সংস্কার করার উদ্যোগ নিতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন