সমকালীন প্রতিবেদন : মাদুর্গা এক অন্য রূপে ধরা দেন এই পুজোয়। প্রাচীন এই পুজোয় মাদুর্গার মুখ রক্তবর্ণের। মায়ের এমন অদ্ভুত রূপের পেছনে রয়েছে এক অলৌকিক কাহিনী। নদীয়ার বৈষ্ণবনগরী নবদ্বীপের ভট্টাচার্য পরিবারে বহু বছর ধরে এমন রূপেই পূজিত হয়ে আসছেন মাদুর্গা।
ভারতের বারানসীতে সংস্কৃতের পাঠ নিতে প্রায় ৩০০ বছরের বেশি সময় আগে বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ থেকে ভারতে আসেন রাঘবরাম ভট্টাচার্য। আর সেই সূত্রেই ১৯১০ সাল নাগাদ নবদ্বীপের যোগমায়াতলায় বসবাস শুরু করেন তিনি। এর ১০ বছর পর এই বাড়িতে দুর্গাপুজোর প্রচলন শুরু হয়।
এই পরিবারের পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে ইতিহাসবিদ শান্তিরঞ্জন দেব জানালেন, একবার পুজোর সময় চার সন্তানকে নিয়ে পুজোয় বসেছিলেন রাঘবরাম। চন্ডিপাঠ করার সময় তিনি এক জায়গায় ভুল উচ্চারণ করেছিলেন। বড় ছেলে সেই ভুল ধরায় তিনি রাগ করে চন্ডিপাঠ করা বন্ধ করে দেন।
এরপর নির্ভুল উচ্চারণে চন্ডি পাঠ করেন বড় ছেলে। কথিত আছে, অদ্ভুতভাবে সেইসময় মাদুর্গার মুখ ঘুরে গিয়ে বড়ছেলের দিকে চলে যায়। পাশাপাশি, মাদুর্গার মুখ রক্তবর্ণের হয়ে যায়। মনে করা হয়, মাদুর্গা রাঘবরামের বড় ছেলের চন্ডি পাঠে সন্তুষ্ট হয়ে মুখের দিক পরিবর্তন করেন এবং ক্রোধান্বিত হয়ে পরায় মুখের রং বদলে যায়।
পুরনো সেই ঘটনার পর থেকেই ভট্টাচার্য পরিবারের এই পুজো লাল দুর্গা পুজো হিসেবেই পরিচিতি লাভ করে। এর পর থেকে এই পরিবারের দুর্গাপুজোয় কোনও চণ্ডীপাঠ হয় না। ষষ্ঠীর সন্ধেয়
মাদুর্গাকে আসনে বসিয়ে বোধন শুরু হয়। এই পুজোয় মাদুর্গাকে ভোগ হিসেবে শোল এবং বোয়াল মাছ নিবেদন করা হয়। পুরনো সেই ঐতিহ্য এখনও বহন করে চলেছেন এই পরিবারের সদস্যরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন