সমকালীন প্রতিবেদন : ইছামতী নদীর কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে বিকল্প অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজে পাচ্ছেন বনগাঁ পুরসভার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। নদী থেকে কচুরিপানা তোলা এবং সেই কচুরিপানা থেকে রাখি, ব্যাগ, টুপি ইত্যাদি সামগ্রী তৈরি করে এবং তা বিক্রি করে যে অর্থ সংগৃহিত হয়েছে, তা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হল।
প্রতি বছর বর্ষার সময় কচুরিপানায় ভরে যায় ইছামতী নদী। ফলে একদিকে যেমন নদী দূষিত হয়ে পরে, অন্যদিকে নদীতে স্নান সহ অন্যান্য কাজকর্ম বাধাপ্রাপ্ত হয়। প্রতি বছর সেই কচুরিপানা তুলে ফেলতে প্রসাসনের অনেক অর্থ ব্যয় হয়। আর এমনই পরিস্থিতিতে বিকল্প পথের সন্ধান পায় বনগাঁ পুরসভা।
মাস কয়েক আগে বনগাঁ পুরসভার তৎকালীন প্রশাসক গোপাল শেঠের কাছে একটি প্রস্তাব আসে যে, ইছামতীর কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জনের বিকল্প পথ বের হতে পারে। সেই প্রকল্পে বলা হয়, নদী থেকে তোলা কচুরিপানাকে শুকিয়ে তা দিয়ে নানাধরণের হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করে বিক্রি করা যেতে পারে।
এরপরই বনগাঁ পুরসভার উদ্যোগে এলাকার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে প্রায় ৫০০ জন মহিলাকে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের মধ্যে ১৩০ জন এই কচুরিপানা দিয়ে রাখি, ব্যাগ, টুপি ইত্যাদি তৈরি করেন। তাঁদের তৈরি এই সামগ্রী গোটা রাজ্য, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে বলে বনগাঁ পুরসভার প্রধান গোপাল শেঠ জানান।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের তৈরি এই সামগ্রী বিক্রি করে পুরসভা যে অর্থ উপার্জন করেছে, সেই অর্থ শনিবার একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর যে মহিলারা এই সামগ্রী তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হল। অর্থ উপার্জনের বিকল্প পথের সন্ধান পেয়ে খুশি তাঁরা।
অর্থ হাতে পাওয়া চম্পা শিকদার নামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যা জানালেন, পুরসভার উদ্যোগে এই কাজ করতে গিয়ে যখন বাড়ির লোকেরা দেখছেন যে, প্রতিদিন একটি ভালো পরিমান অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা হয়েছে, তখন লোকেরাই তাঁদেরকে সহযোগিতা করছেন।
নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে চম্পা শিকদারের মতো অনেক মহিলাই আজ উপকৃত। আগামী দিনে এই প্রকল্পকে আরও বড় আকারে ছড়িয়ে দিয়ে আরও অনেক বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরকে যুক্ত করে তাঁদের অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করতে চায় পুরসভা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন