সমকালীন প্রতিবেদন : রপ্তানী বানিজ্যের ট্রাকগুলিকে এখন থেকে আর দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। এরজন্য স্লট বুকিং পদ্ধতি চালু করল রাজ্য পরিবহন দপ্তর। যদিও নতুন এই নিয়মের ফলে স্থানীয় পরিবহন সংস্থা, কর্মী, শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন মনে মনে করা হচ্ছে। আর তাই তাঁরা নতুন এই নিয়ম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগে এই রাজ্যের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রাকগুলি পণ্য বোঝাই করে সীমান্তে হাজির হয়। সীমান্ত পেরোবার আগে তাদেরকে স্থানীয় ট্রাক পার্কিং এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এক্ষেত্রে বিশেষ করে বনগাঁ সীমান্তের ক্ষেত্রে একসময় ২৫ দিন থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত একেকটি ট্রাককে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।
দিনের পর দিন এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে রপ্তানীকারক, পরিবহন সংস্থাকে মোটা ভাড়া গুনতে হতো। মাস কয়েক আগে বনগাঁর মতো রাজ্যের সমস্ত সীমান্ত এলাকার স্থানীয় ট্রাক পার্কিং এলাকা পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য পরিবহন দপ্তর। আর এরপর থেকে অনলাইন পদ্ধতি চালু হওয়ায় ট্রাকগুলিকে অনেক কম দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
এরইমধ্যে রাজ্য সরকার ২৪ জুলাই থেকে নতুন নিয়ম চালু করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে ভারতের যেকোনও প্রান্ত থেকে রাজ্য পরিবহন দপ্তরের 'সুবিধা' পোর্টালে গিয়ে লগ ইন করে ট্রাক এন্ট্রি করা যাবে। এরজন্য এককালীন ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি তারিখ দিয়ে দেওয়া হবে। সেই নির্দিষ্ট তারিখের ৭২ ঘন্টার মধ্যে ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে।
নতুন এই পদ্ধতিতে ট্রাকগুলিকে আর দিনের পর দিন পার্কিং এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না বলে পরিবহন দপ্তর দাবি করলেও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বক্তব্য, এর ফলে স্থানীয় পরিবহন সংস্থা, ট্রাক মালিক, মজদুরেরা কাজ হারাবেন। ফলে বনগাঁর মতো একটি সীমান্ত শহরের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে।
উল্লেখ্য, বনগাঁ শহরের অর্থনীতিই নির্ভর করে আমদানি–রপ্তানী বানিজ্যের উপর। এই শহরের প্রায় ৭ হাজার ট্রাক, ২০০ পরিবহন সংস্থা, প্রায় ১২ হাজার মজদুর, বহু গোডাউন মালিক রপ্তানী বানিজ্যের উপর নির্ভর করে বেঁচে রয়েছেন।
রাজ্য সরকারের নতুন নিয়ম চালুর ফলে এই হাজার হাজার মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর তাই এই নিয়ম বাতিলের দাবিতে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন