সমকালীন প্রতিবেদন : বৃহস্পতিবার বৃষ্টি মাথায় করে কলকাতার ধর্মতলায় শহীদ দিবসের সমাবেশে হাজির হলেন অগনিত তৃণমূল নেতা, কর্মী। যদিও তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী বক্তব্য দিতে ওঠার আগেই বৃষ্টি থেমে যায়। আর এই বৃষ্টি মাথায় করেও নেতা, কর্মীরা সভা ছেড়ে চলে না যাওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান তৃণমূল নেত্রী।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জী সিপিএমকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, 'সিপিএমের আমলে চিরকুটে চাকরি হতো। ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় এক একটা টিচারির চাকরি বিক্রি হয়েছিল। সিপিএমের নিজস্ব কাগজের রিপোর্টারদের অনেকের বউরা টিচারিতে চাকরি পেয়েছেন। ছেলেরা পার্টি করবে, আর বউয়েরা চাকরি করবে, এইভাবে সিপিএম চাকরিগুলো দিয়েছিল, আমরা জানি এগুলো।’
এই অভিযোগের পাল্টা আক্রমণ করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ক্ষমতা থাকলে সিপিএমের বিরুদ্ধে ওনার হাতে থাকা প্রমাণ প্রকাশ্যে আনুন মমতা ব্যানার্জী। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সিপিএমের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা প্রসঙ্গে সুজনবাবু পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, মমতা ব্যানার্জীকে এদিন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সিপিএমকে আক্রমণ করতে হল কেন?
বৃহস্পতিবার শহিদ দিবসের সমাবেশ থেকে তৃণমূল নেত্রী ফের দাবি করেন, ‘১৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করতে পারতাম। কিন্তু কোর্টের জন্য সব ঝুলে আছে।’ উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশে সাম্প্রতিককালে রাজ্যে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই।
ইতিমধ্যেই এব্যাপারে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেত্রীর দলীয় সমাবেশে শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গ উত্থাপন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তৃণমূল নেত্রী এদিন সিপিএম নেতা তথা কলকাতা পুরসভার তৎকালীন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে নিশানা করে অভিযোগ তোলেন, 'বার্থ সার্টিফিকেট নিয়েও নানা দুর্নীতি হয়েছে।' এব্যাপারে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'আমার একটা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে। একটা তদন্তকমিটি হোক, তার চেয়ারপার্সন হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তদন্ত করে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এরকম একটা পাবলিক মিটিং করে সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনুন। তাহলে আমি এক হাড়ি রসগোল্লা খাওয়াবো। আর যদি না করতে পারেন, তাহলে পাগলা গারদে চলে যান।'
মমতা ব্যানার্জীর তোলা অভিযোগের বিরুদ্ধে কি তিনি মানহানির মামলা করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে এদিন বিকাশবাবু বলেন, ‘এদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে সময় নষ্ট করব কেন? যাদের কথার কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই, যে কথার কোনও মৌলিক সততা নেই, মানহানির মামলা করে তাদের গুরুত্ব বাড়াতে চাই না।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন