শম্পা গুপ্ত : সরকারি হোমের আবাসিক নাবালিকাদের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ হোমের সুপারের বিরুদ্ধে। আর তারই প্রেক্ষিতে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন হোমের সুপার। পুরুলিয়া জেলার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে টামনা থানার শিমুলিয়া গ্রামের অদূরে আনন্দমঠ জুভেনাইল হোম রয়েছে। রাজ্য সরকারের সমাজকল্যান দপ্তর পরিচালিত এই হোমে ৪৯ জন আবাসিক নাবালিকা রয়েছে। বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়া নাবালিকাদের আদালতের নির্দেশে এই হোমে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তারা মুক্তিও পায়।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে এই হোমের নাবালিকারা জেলা আদালতের বিচারকের কাছে তাদের অসহায়তার কথা জানায়। সেইসময় তারা অভিযোগ করে, সুপার সহ হোমের ৩ জন কর্মী এই হোমের নাবালিকাদের উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করে। সুপার ছাড়াও শিশির বলে একজনের নামও উল্লেখ করে তারা।
এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুরুলিয়া জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক হোমে নিজে তদন্তে যান। ওই তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেন জেলা আদালতের প্রধান বিচারকের কাছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জেলা আদালতের প্রধান বিচারক জেলার পুলিশ সুপারকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সদর মহিলা থানায় ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর একটি অভিযোগ দায়ের হয়। আর তারই ভিত্তিতে মামলা শুরু হয়। ওই হোমের করণিক শিশির মাহাতো ওরফে শিশির কাকু এবং ওই হোমের সুপার সৌমিলী দাসের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ে।
হোমের সুপার সৌমিলি রায় প্রথমে কলকাতা উচ্চ আদালত এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন জানান। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি রাজ্যের ডিজির কাছে জানতে চান, কেন অভিযুক্ত হোমের সুপারকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, হলফনামা দিয়ে তা জানাতে বলে আদালত।
এই ঘটনার পর শনিবার ওই সরকারি হোমের অভিযুক্ত সুপার সৌমিলী দাস জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতে (পকসো স্পেশাল আদালত) আত্মসমর্পণ করেন। বিচারক অভিযুক্তকে ২০ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। অন্য আর এক অভিযুক্ত শিশির মাহাতো কলকাতা উচ্চ আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন