শম্পা গুপ্ত : সরকারি হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই স্যালাইন হাতে নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বসলেন এক প্রসূতি। এমনই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলো পুরুলিয়ায়। ওই পরীক্ষার্থীর নাম ভারতী মাহাতো। পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকের পতিডি চন্ডীতলা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষানিকেতনের ছাত্রী তিনি।
জানা গেছে, সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার দিন ভোর সাড়ে ৫ টা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর ব্লকের বাঁশগড় হাসপাতালে ভর্তি হন ভারতী মাহাতো। এব্যাপারে বলরামপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সৌমেন মণ্ডল জানান, 'সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই গৃহবধূ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এই সময় ভারতী মাহাতো নামে ওই বধূ কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানান, তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চান।'
উল্লেখ্য, অন্ত:সত্ত্বা থাকাকালীনই ওই বধূ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। সেই অনুযায়ী তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পরেছিল বলরামপুর শহরের লালীমতি উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে। এদিন পরীক্ষা দেওয়ার কথা শুনেই তড়িঘড়ি বলরামপুর থানার ওসি সুদীপ হাজরা এবং বলরামপুর লালীমতি উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সেন্টার ইনচার্জের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তাঁদের সহযোগিতায় এরপর ওই ছাত্রীর পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করেন বলরামপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সৌমেন মণ্ডল। পরীক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা, বলরামপুর থানার পুলিশ, নার্স এবং চিকিৎসকের উপস্থিতিতে এক হাতে স্যালাইন দেওয়া অবস্থায় অন্য হাতে পরীক্ষা দিলেন ভারতী।
পরীক্ষা দিয়ে খুশি ভারতী মাহাতো। তাঁর এমন মনের জোর দেখে পরীক্ষা শেষে তাঁকে ফুলের স্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বাঁশগড় হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সরা। মঙ্গলবার মাধ্যমিকের দ্বিতীয় দিনেও হাসপাতালে নিজের নবজাত সন্তানকে পাশে নিয়ে পরীক্ষা দিলেন ভারতী মাহাতো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন