সমকালীন প্রতিবেদন : অসময়েই চলে গেলেন শিল্পী তাপস বিশ্বাস। কঠিন অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হল তাঁকে। আজ সকাল ৯ টা ৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ডে শেষনি:শ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। তাঁর এই অকাল প্রয়াণের খবর ছড়িয়ে পরতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিল্পী মহলে।
বনগাঁ থেকে যেসব প্রতিভা বৃহত্তর বাংলায় স্বীকৃতি পেয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন তাপস বিশ্বাস। সুভদ্র, মধুর-স্বভাবী তাপসবাবু বনগাঁর বাসিন্দা হলেও বর্তমানে পরিবার নিয়ে বারাসতে থাকতেন। যদিও বনগাঁর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সব সময় জড়িত থেকেছেন। কর্মসূত্রে তাপস বিশ্বাস আকাশবাণী এবং দূরদর্শনে সঞ্চালনা এবং কণ্ঠদানের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি কবিতা লিখতেন। তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল চলচ্চিত্র পরিচালনায়, বিশেষ করে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাংলাদেশের চিত্রপরিচালক তানভীর মোকাম্মেলের সঙ্গে তাঁর বিশেষ ঘনিষ্ঠতা ছিল।
বহুবিধ গুনের অধিকারী তাপস বিশ্বাস করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তখনই যে তাঁর শরীর ভেতরে ভেতরে অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে, তা টের পান নি। সম্প্রতি ফের অসুস্থ হয়ে পরলে আবারও তাঁকে কলকাতার সেই বেসরকারি হাসপাতালেই তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেখানে নানা পরীক্ষার পর জানা যায়, তাঁর শরীরে রক্ত জমে যাচ্ছে, কিডনির অবস্থা ভালো নয়। ডায়ালিসিসের প্রয়োজন। তারসঙ্গে ক্যানসারে আক্রান্ত হবারও খবর আসে। স্বাভাবিকভাবেই ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে পরে তাঁর পরিবার।
অবশেষে তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য তাঁর শুভাকাঙ্খিরা সোস্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানান। আর তাতে বেশ সাড়া পরে। দিন কয়েক আগে বিশেষ সূত্র ধরে তাঁকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। যদিও সেখানকার চিকিৎসকেরা তখনই তেমন ভরসার কথা শোনাতে পারেন নি। অবশেষে চিকিৎসকদের আশঙ্কাই সত্যি হল। সমস্ত লড়াই শেষ হয়ে গেল আজ সকালে। এমন মর্মান্তিক খবরে ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন বনগাঁ থেকে কলকাতা– সাহিত্য, সংস্কৃতি জগতের বহু মানুষ।
A great and irreparable loss in the cultural arena of Bongaon as well as Bengal.
উত্তরমুছুন