শম্পা গুপ্ত : সমাজে এখনও কিছু ক্ষেত্রে ডাইনি প্রথার মতো ভুল ধারনা মানুষের মধ্যে রয়ে গেছে, তার জ্বলন্ত প্রমান মিলল পুরুলিয়া জেলায়। ডাইনি সন্দেহে পুরুলিয়া জেলার টামনা থানার এক বৃদ্ধার উপর চলছিল অত্যাচার। কোটলই গ্রামে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এক বৃদ্ধাকে দায়ী করে, তাঁকে ডাইনি হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁর উপর শুরু হয়েছিল অত্যাচার। খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন বিজ্ঞান মঞ্চ পুরুলিয়া শাখার সদস্যরা। তাঁদের হস্তক্ষেপে অবশেষে মুক্তি পান ওই বৃদ্ধা।
জানা গেছে, ওই গ্রামের একটি বাড়িতে এক যুবক ফ্যান সারাই করতে গিয়েছিলেন। সেই কাজ চলাকালীন কোনওভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ওই বাড়ির বৃদ্ধাকে দায়ী করে তাকে ডাইনি হিসেবে সন্দেহ করে তার ওপর অত্যাচার শুরু হয়। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা প্রথমে মৃত যুবকের বাড়ির লোককে ডাইনি প্রথা সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করার চেষ্টা করতে গেলে উল্টে সদস্যদের উপর তারা চড়াও হয়। এরপর বিজ্ঞান মঞ্চের প্রবীণ সদস্য দীনবন্ধু গোস্বামী হাতে কলমে দেখিয়ে দেন, কিভাবে ওঝা, গুণীনরা বুজরুকি করে ডাইনি ধরে! আর তারপরই নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন ওই পরিবারের সদস্যরা।
বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের হস্তক্ষেপে এরপর অত্যাচার থেকে মুক্তি পান ওই বৃদ্ধা। পুরুলিয়ার বুক থেকে ডাইনি প্রথা বিলুপ্ত করার এই অভিযানে বিজ্ঞান মঞ্চের এই সদর্থক ভূমিকায় খুশি জেলার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক তথা চিকিৎসক নয়ন মুখার্জী জানান, 'ডাইনি প্রথা সম্পর্কে এখনও জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় কিছু মানুষের মধ্যে ভুল ধারনা রয়ে গেছে। আমাদের মতো সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের দায়িত্বে তাদেরকে সঠিকটা জানানো। আর তাহলেই সমাজ আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন