Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২১

হাবড়ায় ভেজাল মশলা কারখানার হদিশ, গোডাউন সিল, গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী

 ‌

The-fate-of-the-adulterated-spice-factory-in-Habra

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌খাদ্যদ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত মশলায় ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগে উত্তর ২৪ পরগনার হবাড়া থানা এলাকা থেকে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করল এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। সিল করে দেওয়া হয়েছে ওই ব্যবসায়ীর একাধিক গোডাউন। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ক্ষতিকারক মশলা, রাসায়নিক ইত্যাদি।



পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে কলকাতার জোড়াবাগান থানার অর্ন্তগত পোস্তার দর্পনারায়ণ স্ট্রিট এলাকার একটি দোকান থেকে ১১ বস্তা সোনালী রঙ করা ধনিয়া আটক করে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। সেই ধনিয়া ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পর সেখান থেকে রিপোর্ট আসে যে, এই ধনিয়ায় ক্ষতিকারক গন্ধক মেশানো আছে, যা খাদ্যদ্রব্য হিসেবে ব্যবহারে শরীরের নানা জটিল অসুখ হতে পারে।


এই ঘটনার পর ৩০ সেপ্টেম্বর এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ একটি মামলা দায়ের করে। ১ অক্টোবর ওই দোকানের মালিক পল্টন সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেরায় সে জানান, এই ধনিয়াগুলি সে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার অর্ন্তগত আক্রমপুর কৈপুকুর এলাকার ব্যবসায়ী জীবন বনিকের কাছ থেকে কিনেছে।



সেই সূত্র অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধেয় কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট বিভাগের ফুড ইন্সপেক্টর যুগলকিশোর দাঁ এর নেতৃত্বে প্রায় ১০ জনের একটি দল হাবড়া পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জীবন বনিকের বাড়িতে হানা দেয়। তদন্তকারী অফিসারেরা বাড়ির পেছনেই ওই ব্যবসায়ীর ভেজাল মশলা তৈরির একাধিক গোডাউনের সন্ধান পায়।


এব্যাপারে ইন্সপেক্টর যুগলকিশোর দাঁ জানান, 'আমাদের ধারনা ছিল, এই ধরনের ক্ষতিকারণ ধনিয়া নদীয়া জেলা থেকে কলকাতার বাজারে সরবরাহ হয়। কিন্তু পল্টন সাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা প্রথম হাবড়া এলাকার এই ভেজাল কারখানার হদিশ পাই।'‌ এদিন এই গোডাউন থেকে ১৬৩ বস্তা ধনিয়া উদ্ধার হয়। যারমধ্যে ১৪০ বস্তা ধনিয়া সোনালী রঙের।


তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, বাজারে বেশি দাম পাবার জন্য সাধারণ ধনিয়াকে ক্ষতিকারক রাসায়নিক গন্ধকের সঙ্গে বিশেষ পদ্ধতিতে গুদামজাত করে তার রঙ বদলে সোনালী রঙ করে দেওয়ার কাজ হয় এই গুদামে। এই ধনিয়া দেখতে চকচকে বলে বাজারে এর বিক্রি বেশি। অথচ এটি ব্যবহারে শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ভেজাল মশলা ব্যবহারে ক্যান্সার, হার্টের অসুখের মতো মারাত্মক অসুখ হতে পারে।


এই ধরনের অবৈধ কারবার চালানোর অভিযোগে এদিন জীবন বনিক নামে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার একাধিক গোডাউন সিল করে দিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট বিভাগের অফিসারেরা। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে সাড়ে ৩২ কিলো গন্ধক, স্প্রে মেশিন, বস্তা সেলাই করা মেশিন, ওজন করা মেশিন ইত্যাদি। এই গোডাউন থেকে তৈরি হওয়া এই ক্ষতিকারক মশলা কলকাতা সহ পাশাপাশি জেলায় সরবরাহ করা হতো বলে তদন্তকারী অফিসারেরা জানান।


তদন্তকারী দলের প্রধান ইন্সপেক্টর যুগলকিশোর দাঁ আরও জানান, '‌এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডেপুটি কমিশনার বিদিশা কলিতার কড়া নির্দেশ, কলকাতা সহ সংলগ্ন কোনও এলাকাতেই এই ধরনের ভেজাল খাদ্যদ্রব্য তৈরির কারখানা, যা মানব জীবনে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে এমন কারবারের অস্তিত্ব রাখা যাবে না। এরজন্য যতদূর যেতে হয় আমরা যাব এবং এই ধরনের অসাধু কারবারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ জারি থাকবে।'




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন