Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০২১

সরকারি টেলি মেডিসিন ব্যবস্থায় সাড়া ফেলে পুরষ্কৃত বনগাঁ ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর

Awarded-Bangaon-Block-Health-Department

সমকালীন প্রতিবেদন : রাজ্য সরকারের অনলাইন চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যাপক সাড়া ফেলল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তর। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই জেলা তথা রাজ্যের মধ্যে এই ব্লক নতুন টেলি মেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে সর্বাধিক রোগী দেখে শ্রেষ্ঠত্বের পুরষ্কার পেল। এই সাফল্যে গর্বিত ব্লকের সমস্ত স্তরের আধিকারিক, স্বাস্থ্যকর্মীরা।


করোনা পরিস্থিতির কারণে ভিড় এড়াতে অনলাইন চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। নাম দেওয়া হয় 'স্বাস্থ্য ইঙ্গিত'‌। গত ২ আগস্ট নতুন এই চিকিৎসা ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তারপর থেকেই রাজ্যের সমস্ত স্তরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি থেকে নতুন এই টেলি মেডিসিন ব্যবস্থায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।


মূলত গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত করতে, গ্রামের সাধারণ মানুষকে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর নতুন এই ব্যবস্থা চালু করে। ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন এই চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। সরকারি ছুটির দিন বাদ দিয়ে যেমনভাবে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে বহির্বিভাগে চিকিৎসকেরা রোগী দেখেন, এখানেও সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়।


এই চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য গোটা রাজ্যকে ৮ টি অঞ্চলে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক নম্বর অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, বসিরহাট এবং ডায়মন্ডহারবার স্বাস্থ্য জেলা। প্রতিটি স্বাস্থ্য জেলার অধীন যে কটি ব্লক আছে, সেখানে প্রতিদিন অন লাইনে একজন করে চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন। তাঁর সামনে বিশেষ সুবিধা যুক্ত কম্পিউটার থাকবে। 


অন্যদিকে, ওই ব্লকের অধীনে যে কটি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা নিয়ে রোগীরা হাজির হলে সেখানে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রথমে ওই রোগীর নাম, বয়স এর পাশাপাশি ব্লাড প্রেসার, ওজন পরীক্ষা করে তা কম্পিউটারে নথিভূক্ত করবেন। এরপর ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে চিকিৎসক ওই রোগীর সঙ্গে কথা বলে তার সমস্যা শুনে তৎক্ষণাৎ কম্পিউটারে প্রেসক্রিপশন করে দেবেন। সেই প্রেসক্রিপশন অনলাইনে সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছে যাবে সেইসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখান থেকেই স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রেসক্রিপশনের প্রিন্ট আউট রোগীকে দিয়ে দেবেন। সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। 


ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশাপাশি মহাকুমা হাসপাতালে ২ জন এবং জেলা হাসপাতালের ৩ জন চিকিৎসক প্রতিদিন এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় উপস্থিত থাকছেন। এই পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে কমিউনিটি হেলথ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে যারা আগে ইনডোর সিস্টার হিসেবে স্বাস্থ্য পরিষেবা কাজে অভিজ্ঞ রয়েছেন, তাঁদেরকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত করে নতুন এই পরিষেবায় যুক্ত করা হয়েছে। এই পরিষেবার প্রাথমিক কাজটি তাঁরাই সামলাচ্ছেন।


এ ব্যাপারে বনগাঁ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: মৃগাঙ্ক সাহারায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী যেদিন থেকে নতুন এই চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করেছেন, সেদিন থেকেই বনগাঁ ব্লকে নতুন এই ব্যবস্থায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর ব্ল‌ক নতুন এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে রাজ্যের মধ্যে নজির সৃষ্টি করেছেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০ জন রোগী দেখা হয়। প্রশাসনিক কাজের বাইরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেও প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি রোগী দেখেন। 


নতুন এই পরিষেবায় সবথেকে ভালো কাজ করার পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে ভালো কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে বুধবার পুরষ্কৃত হল এই ব্লক। এদিন জেলা সদর বারাসতে স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে বনগাঁ ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা:‌ মৃগাঙ্ক সাহারায়ের হাতে এই পুরষ্কার তুলে দেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা: ‌অজয় চক্রবর্তী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন