সমকালীন প্রতিবেদন : অজয় নদের বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বীরভূম জেলার লাভপুর ও নানুর এলাকায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকা পরিদর্শনে গেলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিধায়ক। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি বীরভূমের অসহায় মানুষদের ত্রাণ পৌঁছানোর উদ্যোগ নিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
টানা বৃষ্টিতে প্রবল জলোচ্ছাসে ভেসেছে বীরভূম জেলার লাভপুর ও নানুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। অজয় নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় একদিকে যেমন জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে, তেমনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষের জমিও। লাভপুরের লাঘাটা, নানুরের থুপসারা অঞ্চল বন্যাকবলিত।
সেখানকার বিস্তীর্ণ এলাকার সাধারণ মানুষ বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন। ভেঙে পড়েছে কাঁচা বাড়ি। ভেসে গেছে গবাদি পশু, বাড়ির আসবাবপত্র সহ একাধিক মূল্যবান জিনিসপত্র। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের কর্মীরা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।
বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, নানুরের বিধায়ক বিধান মাঝি সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা।
লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ অভিযোগ করেন, 'ডিভিসি এবং ঝাড়খণ্ডের সুখাটিয়া জল ছাড়ার আগে যদি জানাতও, তাহলে সাধারণ মানুষ সময় পেতেন। তা সত্বেও জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাঁরা কাজ করছেন।'
জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, 'নানুরের সুন্দরপুরের বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবারের পাশাপাশি আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ত্রাণ সামগ্রীও।' অন্যদিকে, জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানান, 'কোনও মানুষের যাতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য প্রথম থেকেই পুলিশ নজর রেখে চলেছে।'
এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকার সাধারণ মানুষের দুঃখ, দুর্দশার কথা শুনে ত্রাণ পাঠালেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বোলপুরে তাঁর বাড়ি থেকে চিড়ে, দুধ, শাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন তিনি। বীরভূমের বাসাপাড়া, পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, আউসগ্রাম সহ যেসব এলাকা অজয় নদীর জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই এলাকাগুলিতেও ত্রাণ পাঠান তিনি।
অনুব্রত মণ্ডল বলেন, 'আপাতত চিড়ে, দুধ, শাড়ি পাঠানো হলো। প্রয়োজনে ঘটনাস্থলে যাব।' রাজ্য সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকার আছে। সর্বপরি মমতা ব্যানার্জী আছেন। দূর্গত সমস্ত মানুষের জন্যও কিছু না কিছু ব্যবস্থা করা হবে।'
এদিকে, বীরভূমের দুবরাজপুরের লোবা অঞ্চলে পলাশডাঙা ঘাটে হিংলো নদীর পাড় ভেঙে পড়ায় এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী গতকাল পর্যন্ত জানা গেছে, ময়ুরাক্ষী নদী, তিলপাড়া জলাধার থেকে ১৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তবে এব্যাপারে সতর্ক রয়েছে জেলা প্রশাসন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন