Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

রোহিঙ্গারা শরনার্থী কেন ? (‌‌পর্ব-৩)‌

Why-Rohingya-refugees-Episode-3

রোহিঙ্গারা শরনার্থী কেন ? (‌‌পর্ব-৩)‌

অজয় মজুমদার

এই বিবরণ যেকোনও গণহত্যার শামিল হতে পারে। ১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীন হওয়ার সময়ে আরাকান বার্মা দেশভুক্ত হয় ৷ বাঙালি রোহিঙ্গারা পূর্ববাংলার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্যে আন্দোলন শুরু করেন ৷ সেই থেকে বার্মা রোহিঙ্গা বিরোধী ৷ ১৯৮২ সাল পর্যন্ত ৭ লক্ষ ৩৫ হাজার জন রোহিঙ্গা বার্মা পার করেছে ৷ 

এরা মূলত রাখাইন প্রদেশের শহরকে কেন্দ্র করে থাকত ৷ ওই সময়ে বাংলাদেশ সরকার তাদের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ঘোষণা করে যে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। সঙ্গে সঙ্গে বার্মা সরকারও তাদের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ঘোষণা করে যে, বাঙালিরা বিদেশি ৷ 

১৯৮৩ সাল থেকে বার্মা সরকার সীমান্ত সিল করে দেয় ৷ ১৯৯০ সাল থেকে শুরু হয়,রোহিঙ্গাদের বেঁচে থাকার আন্দোলন, টিকে থাকার আন্দোলন ৷ রোহিঙ্গারা জাতীয়তাবাদের পতাকা তুলে ধরল। তাদের বক্তব্য হল– আরাকান ভারত ভূমি ছিল ৷ সুতরাং হাজার বছর ধরে আরাকান আমাদের ৷ 

কি অদ্ভুত ব্যাপার ৷ এই প্রজন্মের মানুষ, অনেকেই মনে করেন, রোহিঙ্গারা বাঙালি নয়। কিন্তু ওরা চাটগাইয়া বাঙাল বলে খ্যাত ছিল ৷ রোহিঙ্গারা বাঙালি হলেও যেহেতু রোহিঙ্গা ভাষায় কথা বলে, এই ভাষার সঙ্গে নাগরিক বাংলা ভাষার বিশেষ কোনও মিল নেই ৷ এই ভাষা চলিত মিশ্রন বাংলা, সিলেট, নোয়াখালী, চিটাগাং এর গ্রাম্য ভাষার মিশ্রণই হল রোহিঙ্গা ভাষা ৷ বাংলা ভাষা যে কত বিচিত্র, তা রোহিঙ্গা ভাষা একটু পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে ৷ তাই আরাকানবাসি বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের আজ পায়ের তলায় মাটি নেই ৷ এরা কোন দেশের নাগরিক ? একটা দেশের লাল চোখ রাঙানিতে একটি জনগোষ্ঠী শেষ হয়ে যাবে ? এই সিদ্ধান্ত মানবতাবিরোধী নয় কেন ?



মোদি সরকার যেভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করছে, তাতে কেবল বিশ্বের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষেরা হতাশ হননি, জনসংখ্যার বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ যারপরনাই হতাশ। প্রতিবেশী বাংলাদেশের জনগণও ভারতের এই আচরণে গভীরভাবে আহত। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন